1. jitsolution24@gmail.com : admin :
  2. shantokh@gmail.com : Sharif Azibur Rahman : Sharif Azibur Rahman

‘চাঁদের বাড়ি’র জন্য এই প্রথম মহাকাশের ইট বানাল ইসরো!

  • প্রকাশের সময় শনিবার, ২২ আগস্ট, ২০২০
  • ৭৮ বার সংবাদটি পাঠিত

চাঁদের পাহাড়’ আর আমাদের নাগালের বাইরে নেই। চাঁদের মাটিতে নেমে টানা কয়েক দিন আস্তানা গেড়ে থাকার জন্য আর চার বছর পরেই পাড়ি জমাচ্ছে নাসা।

কিন্তু বাড়ি বানাতে গেলে তো লাগে ইট, সিমেন্ট, বালি, চুন, সুরকি। সেই ‘চাঁদের বাড়ি’র জন্য এ বার ইট বানিয়ে ফেলল ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (‘ইসরো’) ও ভারতের বিজ্ঞান গবেষণায় দ্বিজোত্তম প্রতিষ্ঠান বেঙ্গালুরুর ‘ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স (আইআইএসসি)’। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্পেস ব্রিকস’ বা মহাকাশের ইট। এই প্রথম।

এই সাড়াজাগানো উদ্ভাবনের দু’টি গবেষণাপত্র সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে দু’টি আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নালে। একটি, ‘সেরামিক্স ইন্টারন্যাশনাল’। অন্যটি-‘প্লস ওয়ান’।

অন্যতম গবেষক আইআইএসসি-র মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর অলক কুমার বলেছেন, ‘মূলত চাঁদ থেকে তুলে আনা মাটি দিয়েই বানানো হয়েছে এই মহাকাশের ইট। ওই মাটিই কাঁচামাল। তবে সেই ইটকে খুব শক্তপোক্ত করে তুলতে এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া আর গুয়ার মটরশুটি ব্যবহার করা হয়েছে। আর ব্যবহার করা হয়েছে মূত্র থেকে পাওয়া ইউরিয়া। এই ইউরিয়া ব্যবহার করার জন্যই খুব কম খরচে মহাকাশের ইট বানানো সম্ভব হয়েছে। এক পাউন্ড ওজনের এই ইট চাঁদে নিয়ে যেতে ভারতীয় মুদ্রায় এখন খরচ পড়বে সাড়ে ৭ লক্ষ টাকা। এই কাজটির সবচেয়ে অভিনবত্ব হল, জীববিজ্ঞান ও মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির এই দু’টি শাখার মেলবন্ধনেই মহাকাশের ইট বানানো সম্ভব হয়েছে।’’

আমাদের বেঁচে থাকার জন্য খুব জরুরি পৃথিবীর প্রাকৃতিক সম্পদগুলি খুব দ্রুত ফুরিয়ে আসছে বলেই অন্য গ্রহে আমাদের বিকল্প ঠিকানা, সেখান থেকে বিকল্প জ্বালানি বা সম্পদ নিয়ে আসার প্রয়োজন অনুভূত হওয়ার ফলেই গত শতাব্দী থেকে চাঁদ, মঙ্গলে যাওয়ার পরীক্ষানিরীক্ষা ও অভিযান শুরু করে দেয় নাসা, ‘ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি (এসা)’-সব বিভিন্ন দেশের মহাকাশ গবেষণা সংস্থাগুলি।

সিমেন্ট এক ধরনের মটরশুটি!

কিন্তু শুধু ইটের উপর ইট বসালেই তো আর বাড়ি বানানো যায় না। সেই ইটগুলিকে শক্তপোক্ত ভাবে বেঁধে রাখা, সাজিয়ে রাখার জন্য লাগে সিমেন্ট।

অলক কুমার বলছেন, ‘আমাদের বানানো মহাকাশের ইটের ক্ষেত্রে সেই সিমেন্টের কাজটা করবে গুয়ার মটরশুটি। একটি বিশেষ প্রজাতির মটরশুটি। যার ক্ষমতা রয়েছে একবারে গদের আঠার মতো। বা তার চেয়েও অনেক গুণ বেশি। এমন ধরনের ইট পৃথিবীতেও ব্যবহার করা যাবে।’’

ইট বানাতে কী ভূমিকা রয়েছে ব্যাকটেরিয়ার?

আমরা জানি, তাদের বিপাক প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই কিছু কিছু অণুজীব নানা ধরনের খনিজ পদার্থ তৈরি করতে পারে। তেমনই একটি অণুজীব ‘স্পোরোসারসিনা পাস্তুরি’। এরা এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া। এরা আমাদের মূত্র থেকে পাওয়া ইউরিয়া থেকে ইউরিয়া ও ক্যালসিয়াম ধাতু নিয়ে নিজেদের বিপাক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তৈরি করে ক্যালসিয়াম কার্বনেটের কেলাস বা ক্রিস্টাল। যে বিপাক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তারা এটা তৈরি করে তার নাম-‘ইউরিয়োলাইটিক সাইক্‌ল’।

অলক কুমার আরও জানান, মহাকাশের ইট বানানোর জন্য তারা ওই বিশেষ ধরনের ব্যাকটেরিয়ার ওই সহজাত ক্ষমতাকেই কাজে লাগিয়েছেন। তারা হাত মিলিয়েছিলেন ইসরোর দুই বিজ্ঞানী অর্জুন দে এবং আই বেণুগোপালের সঙ্গে। গবেষকরা চাঁদ থেকে আনা মাটির আদ্যন্ত নকল নমুনার সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছিলেন ওই ব্যাকটেরিয়াকে। তার পর গুয়ার মটরশুটি থেকে পাওয়া খুব জোরালো আঠার সঙ্গে আমাদের মূত্র থেকে পাওয়া ইউরিয়া আর ক্যালসিয়াম মিশিয়ে দিয়েছিলেন সেই ব্যাকটেরিয়া থাকা চাঁদ থেকে আনা মাটির আদ্যন্ত নকল নমুনায়। তার পর বেশ কয়েক দিন সেই মিশ্রণটিকে রেখে দিয়েছিলেন ওই ভাবেই। যাতে তা খুব ভাল ভাবে জমাট বাঁধে।

বিভিন্ন আকারের ইট খুব সহজেই

অন্যতম গবেষক ইসরোর বিজ্ঞানী বেণুগোপাল এবং আইআইএসসি-র মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর কৌশিক বিশ্বনাথন বলছেন, ‘বিভিন্ন আকারের ইট বানানোর নানা অসুবিধার মুখোমুখি হতে হয় এখন আমাদের। কিন্তু আমাদের বানানো মহাকাশের এই ইটের ক্ষেত্রে সেই অসুবিধাও নেই। আমাদের ইচ্ছেমতোই তাদের বিভিন্ন আকার আমরা তৈরির সময়েই বানিয়ে ফেলতে পারব, অনেক কম কসরতে।’’

আরও কম খরচের স্পেস ব্রিকস

তবে এই মহাকাশের ইট আরও কম খরচে বানানোর উপায় খুঁজে পেয়েছেন আইআইএসসি-রই আর এক গবেষক রেশমি দীক্ষিত। তার গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে বিজ্ঞান-জার্নাল ‘প্লস ওয়ান’-এ।

সূত্র: আনন্দবাজার।

সংবাদটি সেয়ার করে পাশে থাকুন

একই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved  2024
Design by JIT SOLUTION