মনিরামপুর প্রতিনিধিঃ আজ গল্পশুনাবো অদম্য মনবলের অধিকারি এক বীরের।আমির হোসেন(গোল্লাওয়ালা) তার জন্মস্থান ভারত।পাক-ভারত যখন যৌথ ছিল তখন তিনি অনেক ছোট।যশোরের বেনাপোল বডার দিয়ে পরিবারকে সাথে নিয়ে বাবার ঘাড়ে চড়ে এসেছিলেন বাংলাদেশের অন্যতম জেলা যশোরে। পরে ধীরে ধীরে শুরু করেন হোটেলের কাজ।কিছুদিন পর হঠাৎ তার পায়ে একটি সমস্যা দেখা দেয় এবং জানতে পারে তিনি আর কখনো সাভাবিক ভাবে চলাফেরা করতে পারবেন না। তিনি ভেবেছিলেন হয়তো জীবন থেমে গেল তাকে মানুষের কাছ থেকে সাহায্য নিয়ে চলতে হবে।কিন্তু না,, তিনি ভাবলেন আল্লাহ পা দুটো নিয়েছে তাতে কি হাত দুটো তো নেয় নি। সেই মনবল আর নিজ প্রচেষ্টায় যশোর শহরের এক গলিতে তৈরি করেন একটি মাছ ভাতের হোটেল।পরবর্তীতে তিনি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়।স্ত্রীকে নিয়ে ভালোই চলছিলো সংসার,কিন্তু বিবাহের ২০ বছর পেরিয়ে গেলেও কোন সন্তানের মুখ দেখতে পারেনি।অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে চলে আসেন গ্রামে।গ্রামে এসে যশোর সদর উপজেলার চাঁচড়া ইউনিয়নের গোয়ালদাহ বাজারে কাঁচা বাজারে দেন একটি ভাজা পোড়ার দোকান।
কিছুদিন পর তার ঘরকে আলোকিত করে আব্দুল্লাহ নামে একটি পুত্র সন্তান জন্ম নেয়।আবদুল্লাহ এবার SSC পরিক্ষা দিয়েছে।
পরবর্তীতে ৩/৪ বছর পর সুরাইরা নামে আরেকটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়।সুরাইয়া এখন ৬ষ্ট শ্রেণীতে পড়েছে।পড়াশুনার পাশাঁপাশি সে ও ভাই বাবার কাজে সহযোগিতা করে।বয়স বাড়ছে মেয়েটির বাবা তাকে বাজারে আনতে চায় না তবুও ভাগ্যের এই লিখন তাকে বাজারে আসতে বাধ্য করেছে।
সেচ্ছাসেবী সংগঠন “ঐক্য-বন্ধন”র সভাপতি মাহামুদুল হাসান(সোহাগ)বলেন,আমির হোসেন গোয়ালদা বাজারে প্রায় ২০বছর যাবৎ ভাজাপোড়া বিক্রি করছে।আমারা যারা বাজারে যায় তাকে চিনি।তার দোকানের ভাজাপোড়া না খেলে মনে হয় কিছু একটা অসম্পূর্ণ রয়ে গেল। তার এই পরিশ্রমের ফসল হিসেবে গোয়ালদাহ গ্রামে রাজগঞ্জ- পুলেরহাট রোডের সাইটে তৈরি করেছেন একটি সুন্দর ছাঁদের বাড়ি।তিনি তার ছেলে মেয়ের জন্য পর্যাপ্ত সম্পদও করেছেন।
তার শেষ জীবনের ইচ্ছা,ছেলে-মেয়ে পড়াশোনা শেষ করে একটা ভাল চাকরি করবে শেষ বয়সে ছেলের আয়ের টাকা দিয়ে বাকী জীবনটা আরাম আয়েশে কাটাতে চায়।আমিরের সন্তানরা পারবে কি তার এই শেষ ইচ্ছা পূরন করতে।