এম. হাসান রিয়াদ-হাবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ ইরানের কুদস বাহিনীর সাবেক কমান্ডার লে. জেনারেল কাসেম সোলাইমানির হত্যাকাণ্ডকে আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘ ঘোষণার লঙ্ঘন বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ প্রতিবেদক অ্যাগনেস ক্যালামার্ড। তিনি তার তদন্ত প্রতিবেদনে বলেছেন, জেনারেল সোলাইমানি মার্কিন স্বার্থে আঘাত হানতে চেয়েছিলেন বলে তাকে হত্যা করার যে অজুহাত ওয়াশিংটন দাঁড় করিয়েছিল তা প্রমাণ করা যায়নি।
জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদে আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) ক্যালামার্ডের প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হবে। এতে তিনি বলেছেন, সোলাইমানি আমেরিকার স্বার্থে একটি আঘাত হানতে চেয়েছিলেন বলেও ওয়াশিংটন প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স ক্যালামার্ডের প্রতিবেদনের কিছু উদ্ধৃতি প্রকাশ করেছে যেখানে বলা হয়েছে, “মেজর জেনারেল সোলায়মানি ইরাক ও সিরিয়ায় ইরানের সামরিক কৌশল ও পদক্ষেপের নীতি-নির্ধারণী ভূমিকা পালন করতেন। কিন্তু মার্কিন দাবির বিপরীতে তিনি (মানুষের) জীবনের জন্য অত্যাসন্ন কোনো হুমকি ছিলেন না। কাজেই আমেরিকা তাকে হত্যা করে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে।”
‘মার্কিন সন্ত্রাসী হামলায় জেনারেল সোলাইমানির দেহ ভস্মিভূত হলেও আংটিসহ হাতটি অক্ষত ছিল যা দেখে তার মরদেহ শনাক্ত করা হয়’
জাতিসংঘের এই বিশেষ প্রতিবেদকের প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, আত্মরক্ষার অজুহাতে তৃতীয় কোনো দেশে আরেকটি দেশের সেনা কমান্ডারের ওপর এই প্রথম এ ধরনের পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে। ক্যালামার্ড তার প্রতিবেদনে বলেন, অথচ জাতিসংঘ ঘোষণার ঘোরতর লঙ্ঘন সত্ত্বেও জেনারেল সোলাইমানি এবং তার সঙ্গে থাকা একজন পদস্থ ইরাকি সেনা কমান্ডারকে হত্যার দায়ে কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থা আমেরিকাকে শাস্তি দেয়ার পদক্ষেপ নেয়নি।
প্রতিবেদনে বিশ্বের সরকারগুলোর পক্ষ থেকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড চালানোর জন্য সামরিক ড্রোন ব্যবহারের তীব্র নিন্দা জানিয়ে ড্রোন ব্যবহারের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক আইন তৈরি ও তা কঠোরভাবে মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়।
গত ৩ জানুয়ারি ইরাকের রাজধানী বাগদাদের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করার সময় তাকে বহনকারী গাড়ির বহরে ড্রোন হামলা চালায় ইরাকে মোতায়েন সন্ত্রাসী মার্কিন সেনাবাহিনী। হামলায় জেনারেল সোলাইমানি এবং ইরাকের জনপ্রিয় গণবাহিনী ‘হাশদ আশ-শাবি’র উপপ্রধান মাহদি আল মুহান্দিসসহ আরো কয়েকজন সেনা জওয়ান শহীদ হন।