1. jitsolution24@gmail.com : admin :
  2. shantokh@gmail.com : Sharif Azibur Rahman : Sharif Azibur Rahman

২০০ বছরের সন্ন্যাসতলী ঘুড়ির মেলা বন্ধ করল প্রশাসন

  • প্রকাশের সময় রবিবার, ২১ জুন, ২০২০
  • ১২৩ বার সংবাদটি পাঠিত

তাসনিয়া ঐশী,জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃকরোনার কারণে জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার ঐতিহ্যবাহী সন্ন্যাসতলী ঘুড়ির মেলা বন্ধ করেছে স্থানীয় প্রশাসন। প্রতি বছর বাংলা জৈষ্ঠ্য মাসের শেষ শুক্রবার গ্রামীণ এ মেলাটি বসে ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়নের তুলশীগঙ্গা নদীর পশ্চিম পাড়ে মন্দির সংলগ্ন জমিতে। প্রবীণদের দাবি, প্রায় ২০০ বছর পর এবারই প্রথম মেলাটি বন্ধ করা হলো।তুলশীগঙ্গার তীরে বসেছে ঐতিহ্যবাহী ঘুড়ির মেলা

জনশ্রুতি রয়েছে, প্রায় দুইশো বছর আগে সন্যাসী পূজার তিথিতে সন্যাসতলী মন্দিরের পাশে দুই দিনব্যাপী এই মেলার রেওয়াজ শুরু হয়েছিল।

নানা রঙের ঘুড়ি এই মেলার মূল আকর্ষণ। যে কারণে প্রচলিত হয় ঘুড়ির মেলা নামে। এটি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উৎসবের অংশ হলেও ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে প্রতিবছর এই মেলা হয়ে ওঠে সার্বজনীন মেলবন্ধনের ক্ষেত্র।
ক্ষেতলাল উপজেলা ছাড়াও দূর-দূরান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ আসেন ঘুড়ির মেলায়। মেলায় বসে রকমারি মিষ্টির দোকান। খই-মুড়কি, তিলের খাজা, কটকটি, শাহী জিলাপি, দাঁতভাঙা, খাগড়াই-বাতাসা, হাওয়াই মিঠাই, নারকেলের নাড়ু, রেশমি চুড়ি, চুলের ফিতা, তাল পাতার সেপাই, কুলা, পিঁড়ি, ঝুড়ি- এ সবই মেলে ঘুড়ির মেলায়।

তারা বলেন, আমাদের বাবা-দাদা এই মেলায় আসতেন। সে পরম্পরায় আমরাও আসি।

মেলা আয়োজক কমিটির সভাপতি মন্টু চন্দ্র বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উৎসব হলেও আমরা হিন্দু-মুসলিম মিলে মেলার আয়োজন করি। সারাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা এই মেলায় আসেন।

মেলা উপলক্ষে জামাইসহ স্বজনদের অ্যাপায়নের ধুম পড়ে যায় আশপাশের প্রায় ৪০ গ্রামের বাড়িতে। শুরু থেকেই একদিনের এ মেলায় নানা ধরনের ব্যাপক ঘুড়ি বেচা-কেনার রেওয়াজ চালু থাকায় এটি ‘ঘুড়ির মেলা’ হিসেবেই পরিচিত।

স্থানীয় প্রবীণদের মতে এটি ২০০ বছরের পুরাতন মেলা। স্থানীয় মন্দিরে সন্ন্যাসী পূজা পালনের মধ্য দিয়ে এর যাত্রা শুরু। মেলাকে ঘিরে আশপাশের প্রায় ৪০টি গ্রামে জামাইসহ স্বজনদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। মেলায় রকমারি মিঠাই মিষ্টান্ন ও সংসারের যাবতীয় জিনিসপত্রের দোকানসহ কসমেটিক্স,মাটির হাঁড়ি-পাতিল, মাছ ধরার নানা সামগ্রী এবং বিনোদনের জন্য বসানো হয় নাগর দোলা ও চরকি। এ ছাড়া কাঠের আসবাবসহ মেলার মূল আকর্ষণ ফসলের মাঠজুড়ে ওড়ানো হয় রং-বেরংয়ের ঘুড়ি। ঐতিহ্যবাহী সন্ন্যাসতলীর ঘুড়ির মেলাকে ঘিরে এর তিন কিলোমিটারজুড়ে স্থানীয় বিভিন্ন সড়কের মোড়ে মোড়েও রকমারি জিনিসপত্রের দোকান বসতো। প্রতি বছর স্থানীয় প্রশাসনের সার্বিক নিরাপত্তায় এ মেলা উপলক্ষে এলাকার মহব্বতপুর, জিয়াপুর, আমিড়া, মাতাপুর, জামালগঞ্জ ও মামুদপুরসহ আশপাশের ৪০ গ্রামে বিরাজ করতো উৎসব মুখর পরিবেশ। কিন্তু করোনার কারণে এবার সবই ভেস্তে গেছে।

স্থানীয় মামুদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মশিউর রহমান শামিম জানান, প্রতিবছর বাংলা জৈষ্ঠ্য মাসের শেষ শুক্রবার স্থানীয় সন্যাসতলীতে ঐতিহ্যবাহী ঘুড়ির মেলা বসে। একদিনের এ মেলায় নারী-পুরুষের ঢল নামে। মেলাটি বহুকালের হলেও করোনার কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্যই এবার বন্ধ করে দিয়েছেন স্থানীয় প্রশাসন।

ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরাফাত রহমান বলেন, করোনার কারণে এবার সন্ন্যাসতলীতে মেলা বসানোর অনুমতি দেওয়া হয়নি। কারণ মেলায় যত মানুষের আনাগোনা হয় তাতে এলাকার মানুষ প্রচণ্ডভাবে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়বে। সেই দিকটি বিবেচনা করে সকলের মঙ্গলের স্বার্থেই এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সংবাদটি সেয়ার করে পাশে থাকুন

একই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved  2024
Design by JIT SOLUTION