1. jitsolution24@gmail.com : admin :
  2. shantokh@gmail.com : Sharif Azibur Rahman : Sharif Azibur Rahman
শিরোনামঃ
রাজনৈতিক দলের পরিচয়ে অফিস পাড়া দখলে মরিয়া একটি পক্ষ সাদীপুরে পরিবারিক জমি বণ্টন না করে জবরদখলের অভিযোগ ছোট ভাইয়ের বিরুদ্ধে সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারে সন্তান জন্ম দিলেন এইডস আক্রান্ত নারী বাঁচুক অমর প্রেম গাঁথার চন্ডিদাস-রজকিনীর ঘাট, জেগে উঠুক ইতিহাস! বিপুল পরিমাণ সরকারি ঔষধ সহ ডিবি পুলিশের হাতে আটক-১ যবিপ্রবিতে পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে প্রতিবন্ধকতা বিষয়ক ন্যাশনাল কনফারেন্স অনুষ্ঠিত কৃষির আধুনিকায়নে ‘খামারি মোবাইল অ্যাপ’ ও ‘ক্রপ জোনিং সিস্টেম’ অপরিহার্য: ডিএই’র অতিরিক্ত পরিচালক আলমগীর বিশ্বাস কালীগঞ্জে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত ১ আহত একাধিক কোরবানির পশুর চামড়া সংরক্ষনে সরকারিভাবে লবন সরবরাহ মনিরামপুরে আসাদুজ্জামান মিন্টুকে সংবর্ধনা প্রদান

বিদ্যালয়ে নিয়োগ বহির্ভূতভাবে চাকরি করছেন এক শিক্ষিকা ও অফিস সহকারী

  • প্রকাশের সময় সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ১০১ বার সংবাদটি পাঠিত
বিদ্যালয়ে নিয়োগ বহির্ভূতভাবে চাকরি করছেন এক শিক্ষিকা ও অফিস সহকারী

সাহিদুল এনাম পল্লব,ঝিনাইদহ

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার অধ্যক্ষ মোশারফ হোসেন -সালেহা খাতুন নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বর্তমান সমাজ বিজ্ঞানের শিক্ষক ও অফিস সহকারি এর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে তারা নিয়োগ বহির্ভূত ভাবেই ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছে। এছাড়া তারা এমপিও সুবিধা ভোগ করছে। অথচ যারা বৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত ছিল তার একজন শিক্ষক আজও এমপিওভুক্ত হয়নি। আর অফিস সহকারীকে প্রতিষ্ঠান থেকে জোর করে তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। উল্লেখ্য এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ২০০৮ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে এবং আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ২২ সালের দিকে এমপিও ভুক্ত এর তালিকায় আসে। শিক্ষকের নাম মোছাঃ হালিমা খাতুন তিনি এমপিও ভুক্ত হয়েছেন ২০২২ সালের ৭ জুলাই সমাজ বিজ্ঞানের শিক্ষক হিসাবে। ব্যানবেইস তথ্য মতে ২০১৯ থেকে ২০২১ সালে হালিমা খাতুনের নাম এসেছে সহকারি শিক্ষক (সমাজ বিজ্ঞান) হিসেবে তারপরে ২০২২ ও ২০২৩ সালে তার নাম এসেছে সহকারী শিক্ষক (ইংরেজি) হিসেবে। ২০১৯ সালের আগে ব্যানবেইজ তালিকায় হালিমা খাতুনের নাম নেই। হালিমার স্থলে নাম আছে জাহিদুল ইসলামের। বিদ্যালয়ের বিভিন্ন তথ্যসূত্র থেকে জানা যায় হালিমা খাতুন শিক্ষক হিসাবে অত্র প্রতিষ্ঠানে ২০১৯ সালে যোগদান করে। তবে এই সালে কোন শিক্ষকের নিয়োগ দিতে হলে তার এনটিআরসির সনদ বাধ্যতামূলক থাকতে হবে যার কারণে ‌‌তাকে ২০১৪ সালের ভুয়া নিয়োগ দেখানো হয়েছে। এই ভুয়া নিয়োগ দেখাতে গিয়ে হালিমা খাতুন একটি ভুয়া সনদ জমা দিয়েছেন। ইংরেজি শিক্ষক হিসেবে যোগদান করতে হলে একটি কোর্স সার্টিফিকেট প্রদান করতে হয় তাই তিনি বাংলা কলেজ থেকে ২০১২/১৩ সালের সেশনে একটি কোর্স কমপ্লিট করেছেন এই মর্মে ২টা কোর্স সার্টিফিকেট পেয়েছেন। এছাড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক প্রদত্ত দুইটা কোর্স সনদ জমা দেন। তার দুইটি ভুয়া নিয়োগপত্র পাওয়া যায়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সূত্র থেকে তার দুইটা ভুয়া নিয়োগপত্র পাওয়া যায় তাতে তার নিয়োগ দেখানো হয়েছে ২০১৪ সালের ১৫ ই এপ্রিল। একই তারিখে একটিতে তাকে সমাজ বিজ্ঞানের শিক্ষক ও অপরটিতে তাকে ইংরেজি শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। নিয়োগটি ২০১৪ সালের আব্দুস সোবান নামের সভাপতির দেওয়া হিসাবে দেখানো হয়েছে। উভয় পদে তার যোগদান দেখানো হয়েছে ১৭ এপ্রিল ২০১৪ সাল। মাউশিতে বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারীদের তথ্য ফরমে তার নিয়োগ সহকারী শিক্ষক (ইংরেজি) উল্লেখ করা হয়েছে ১৭/৪/২০১৪ সাল। ২০১৪ সালের ১৭ ই এপ্রিল নিয়োগ দেখালেও ২০২১ সালের পূর্বে কোথাও শিক্ষক হাজিরা খাতায় তার স্বাক্ষর পাওয়া যায় না। এবিষয়ে হালিমা খাতুনের সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমি ২০২০ সাল থেকে এই স্কুলে যোগদান করেছি। তবে এই যোগদানের সময় তাকে অনেক টাকা পূর্বের প্রধান শিক্ষককে দিতে হয়েছে। প্রধান শিক্ষক কিভাবে তাকে নিয়োগ দিয়েছে সেটা সে জানে না। তিনি আরো বলেন, ২০১৪ সালে তার নিয়োগ তবে সেসময় প্রধান শিক্ষক কে ছিল তার নাম বলতে পারেনি। তবে হালিমা খাতুন সাংবাদিকের ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হয়নি। সাংবাদিককে বলে যে আপনি যদি আমার বক্তব্য রেকর্ড না করেন তাহলে আমি কথা বলব। তার বক্তব্য রেকর্ড না করা শর্তে উপরোক্ত কথাগুলো সে জানায়। নিয়োগের জন্য কোন কোন পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়া হয়েছিল এ প্রসঙ্গে তিনি কিছুই বলতে পারেন না। তার দুইটা কোর্স সার্টিফিকেটের কথা অস্বীকার করেন। সে বলে আমি সমাজবিজ্ঞানের শিক্ষক হিসেবেই বেতন পাচ্ছি। কিন্তু কত টাকা দিতে হয়েছে এ বিষয়ে জানাতে অস্বীকার করেন। হালিমা খাতুন বলেন এবিষয়ে সেই সময়ে বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আব্দুল সোবহান ছিল তিনি সব বলতে পারেন। এবিষয়ে ২০০৮ সালের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শুরুতে সমাজবিজ্ঞানের শিক্ষক হিসাবে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক জাহিদুল ইসলাম বলেন,আমি মূলত এই প্রতিষ্ঠানের সমাজ বিজ্ঞানের শিক্ষক। যে হালিমা খাতুন ২০২০ সালের দিকে স্কুলে আসলো তার নাম কিভাবে এমপিওভুক্ত হলো ? আর আমার নাম কেন এমপিওভুক্ত হলো না তা আমার শিক্ষা অফিসার সহ দেশবাসীর কাছে প্রশ্ন। আমি এতদিন ধরে পরিশ্রম করছি আমি কি আমার পরিশ্রমের কোন মূল্য পাবো না? হালিমা খাতুনের মত একইভাবে জাল-জালিয়াতি নিয়োগপত্র দেখিয়ে এমপিও ভুক্ত হয়েছেন বিদ্যালয়ের অফিস সহকারি রেবা খাতুন। যার নিয়োগ দেখানো হয়েছে ২০১৩ সালে। নিয়োগের অফিস আদেশ যেটা দেখানো হয়েছে সেখানে জেলা শিক্ষা অফিসারের স্বাক্ষর জাল স্মারক নাম্বার নেই। রেজুলেশনে ভুয়া স্বাক্ষর। ভুয়া নিয়োগ কমিটি। ভুয়া পত্রিকার কাটিং যেমন ২০০৮ সালে আজকের কাগজ বন্ধ হয়ে গেছে অথচ সেই দৈনিক আজকের কাগজে ২০১৩ সালের বিজ্ঞপ্তি দেখানো হয়েছে। ২০২১ সালের পূর্বে ব্যানবেইজে তার নাম নেই। ২০১৩ সাল থেকে ব্যানবেইজে নাম আছে অফিস সহকারী হিসেবে সবেদা খাতুনের। এমনকি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দৈনিক হাজিরা খাতায় ২০১৯ সাল পর্যন্ত রেবা খাতুনের নাম নেই। এমনকি নিয়োগ পরীক্ষার একটি ভুয়া নিয়োগ পরীক্ষার খাতা তৈরি করা হয়েছে। পরীক্ষাসেই রেবা খাতুন ২০২২ সালের ৭ই জুলাই অফিস সহকারী হিসেবে এমপিও ভুক্ত হয়ে সুবিধা ভোগ করছে। এই প্রসঙ্গে রেবা খাতুন এর কাছে জানতে চাইলে সে বলেন, আমি ২০২২ সাল থেকেই স্কুলে আছি তখনকার প্রধান শিক্ষক এবং সভাপতি কি কি কাগজপত্র বানিয়ে আমাকে নিয়োগ দিয়েছে আমি তা জানি না। আমার সাথে কারা কারা পরীক্ষা দিয়েছিল আমি তা বলতে পারব না। এ প্রসঙ্গে অফিস সহকারী সবেদা খাতুন বলেন ২০২০ সালের ১৯শে জুলাই করোনা কালীন সময়ে আমাকে হঠাৎ করে অফিস থেকে একটা নোটিশ করা হয়। সেই নোটিশের প্রেক্ষিতে আমি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গেলে তৎকালীন সভাপতি আজম মেম্বার জোরপূর্বক আমাকে একটি কাগজের স্বাক্ষর করিয়ে নেন। আমাকে ব্যাপকভাবে স্কুল প্রাঙ্গনে হেনস্থা করেন। মেম্বার আমাকে বলেন,স্কুলে আর আসবি না আসলে সমস্যা আছে। সে থেকে আমি আর স্কুলে যেতে পারিনি। আজম মেম্বার এতটাই ক্ষমতাশালী ছিল যে তার বিপক্ষে এ অঞ্চলের কারো কোন কথা বলার সাহস ছিল না। এমনকি আমি শিক্ষা অফিস বা অন্য জায়গায় যাওয়ার সাহস পায়নি। আমি অনেক দিন স্কুলে পরিশ্রম করেছি কিন্তু ফল ভোগ করছে আরেকজন আমি এঘটনার সুষ্ঠ বিচার চাই। এব্যাপারে অধ্যক্ষ মোশারফ হোসেন সালেহা খাতুন নিন্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নাসরিন খাতুনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন,পূর্বের প্রধান শিক্ষক রনী আক্তার কিভাবে তাকে নিয়োগ দিয়েছেন তা আমি কিছুই বলতে পারব না। উনি ঘুষ নিয়ে জাল জালিয়াতি করে বিভিন্ন শিক্ষক কর্মচারীদের নিয়োগ দিয়েছেন। সে এভাবেই প্রতিষ্ঠান থেকে ১ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তবে হালিমা খাতুন কে আমরা সমাজবিজ্ঞানের সহকারী শিক্ষক হিসেবেই জানি। পূর্বের প্রধান শিক্ষকের নামে সার্টিফিকেট জালিয়াতির অভিযোগে মামলা হয়েছে। আপনি যদি ভালোভাবে খোঁজ নেন তাহলে কয়েকজন বাদে সকলেই এই বিদ্যালয়ে জাল-জালিয়াতির নিয়োগ হয়েছে। আপনি শুধু দেখতে পারেন সার্টিফিকেট জাল কিনা? যারা এমপিও হয়েছে তাদের ব্যাপারে আপনার কথা না বলাই ঠিক। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের নিকট স্কুল হাজিরা খাতা দেখতে চাইলে সে বলে যে পূর্বের প্রধান শিক্ষক সমস্ত খাতাপত্র নিয়ে গেছে। যার কারণে কোন খাতাপত্র দেখানো কাউকে সম্ভব না। এই নিয়োগ সংক্রান্ত ব্যাপারে পূর্বের ২০১৩ সালের সভাপতি আব্দুস সুবহানের সাথে কথা বললে সে বলে যে সেই সময়ে প্রধান শিক্ষক কাকে কাকে নিয়োগ দিয়েছে তা আমি সঠিকভাবে বলতে পারব না তবে সবেদা খাতুন প্রতিষ্ঠান শুরু থেকেই কর্মরত আছে ,তার জায়গায় আমি কাউকে নিয়োগ দেয়নি। এবিষয়ে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার কামরুজ্জামান বলেন,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে যেভাবে ব্যানবেইজ তালিকা দেওয়া হয় আমরা সেই ভাবে পাঠিয়েদি। যার নিয়োগ হয়নি তার কিভাবে বেতন হলো সে ব্যাপারেই তিনি সঠিক উত্তর দিতে পারেনি। তবে বলেছে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একাধিক সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক থাকতে পারে। যদি কোন অনিয়ম দুর্নীতি হয়ে থাকে তাহলে সেই ব্যাপারে উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে তার শাস্তি ব্যবস্থা করবে। তিনি আরো বিরক্ত হয়ে বলেন,আপনারা পারলে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দেন এবং জালিয়াতের দায়ে ওদের ফাঁসি দিয়ে দেন। বর্তমান উক্ত প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজিয়া আক্তার চৌধুরী বলেন, যদি জাল জালিয়াতের মাধ্যমে নিয়োগ হয় তা প্রমাণিত হলে আমি আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করব। ঝিনাইদহ জেলা শিক্ষা অফিসারের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, এই ব্যাপারে প্রমাণ পেলে উনি একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে এর যথা উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। তিনি আরো বলেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যানবেইজের তালিকা অত্র প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক তৈরি করে উপজেলা শিক্ষা অফিসার কে পাঠালেন। তিনি যাচাই-বাছাই এর মাধ্যমে জেলা শিক্ষা অফিসে প্রেরণ করলে সেখান থেকে মাউশিতে পাঠানো হয়ে থাকে।

সংবাদটি সেয়ার করে পাশে থাকুন

একই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved  2024
Design by JIT SOLUTION