নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরে সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান জন্ম দিয়েছেন এইডস আক্রান্ত এক নারী। যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে তার অস্ত্রোপচার করা হয়।রোববার (১ জুন) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে অস্ত্রোপচার শুরু হয়ে চলে দুপুর ১২টা পর্যন্ত। ওই নারী পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। বর্তমানে মা ও শিশু দুজনই সুস্থ আছেন। তাদের হাসপাতালের মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডের একটি ক্যাবিনে নিবিড় পরিচর্যায় রাখা হয়েছে।এ নিয়ে যশোর হাসপাতালে দ্বিতীয়বারের মতো এইচআইভি-এইডসে আক্রান্ত অন্তঃসত্ত্বা কোনো নারীর সফল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হলো।এদিকে অস্ত্রোপচার কার্যক্রম শেষে গাইনি বিভাগের অস্ত্রোপচার কক্ষ ৪৮ ঘণ্টার জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। তবে জরুরি অস্ত্রোপচার চলবে।হাসপাতালের প্রশাসনিক ও গাইনি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, রোববার হাসপাতালের গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. ইয়াসমিন আক্তার ও অ্যানেস্থেসিওলজিস্ট জাফর ইকবালের নেতৃত্বে সাত সদস্যের মেডিকেল টিম এই অস্ত্রোপচারে অংশ নেয়। দীর্ঘ দুই ঘণ্টা অস্ত্রোপচার রোগীকে মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডের কাবিনে সেট করা হয়। মা ও নবজাতক বর্তমানে সুস্থ আছেন।গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. ইয়াসমিন আক্তার জানান, প্রসূতির অস্ত্রোপচারে ব্যবহৃত ইন্সট্রুমেন্ট, মাফ, গজ, ব্যান্ডেজসহ অন্যান্য জিনিসপত্র আগুনে পুড়িয়ে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে। প্রসূতি অপারেশন থিয়েটার আগামী ৪৮ ঘণ্টার জন্য জীবাণুমুক্ত মেডিসিন দিয়ে বন্ধ রাখা হয়েছে।তিনি আরও জানান, এইডসে আক্রান্ত ওই প্রসূতি ৩৬ সপ্তাহের গর্ভবতী ছিলেন। অস্ত্রোপচারের আগে তার সামাজিক, শারীরিকসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। তবে সব সমস্যা উপেক্ষা করে তার অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে।এ বিষয়ে যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক হুসাইন শাফায়াত বলেন, এইডস আক্রান্ত হওয়ায় রোগী ও পরিবারের পরিচয় গোপন রাখা হয়েছে। এ নিয়ে অন্তঃসত্ত্বা দুই নারীর এইডস আক্রান্ত হওয়ার পৃথক তথ্য পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে একজন তার স্বামীর মাধ্যমে এইডসে আক্রান্ত হয়েছেন। অপরজন চিকিৎসা সংক্রান্ত সেবা নিতে গিয়ে কোনো না কোনোভাবে তিনিও মরণব্যাধি এইডসে আক্রান্ত হয়েছেন।তত্ত্বাবধায়ক আরও জানান, আক্রান্ত নারীর পরিবারে অন্য কেউ এইডস আক্রান্ত আছেন কি-না, এ বিষয়ে এনজিওকর্মীরা খোঁজখবর নিচ্ছেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষায় নবাগত শিশুর শরীরে এইডসের আলামত পাওয়া না গেলে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।