কণ্ঠ ডেস্ক
মনিরামপুরে যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতার স্বাদ থেকে বঞ্চিত ছিলেন, তাঁরা এখন সরকারি, বেসরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানে প্রভাব বিস্তারের প্রতিযোগিতায় মেতে উঠেছেন। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরে অফিস পাড়া নিজেদের দখলে নিতে মরিয়া একটি পক্ষ। যাদের কেউ চাইছেন চেন্ডার বানিজ্য, কেউ চাইছেন প্রতিষ্ঠানের চেয়ার, আবার কেউ ব্যস্ত সরকারি বরাদ্দ দেওয়া টিউবওয়েল, টয়লেট বিভিন্ন উপকরনে পুরোপুরি তাদের চাওয়া মোতাবেক হতে হবে। ক্ষমতার পালাবদলে যেন দখলের মচ্ছব লেগেছে সর্বত্র। বিপদে পড়েছেন অধিকাংশ সদ্য যোগদানকৃত বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা। তারা আসলে কি করবেন ঠিক বিষয়টি বুঝে উঠতে পারছেন না। আর যার সরাসরি প্রভাব পড়ছে উপজেলার জনগণের উপর। কারণ যেখেনে জণগণ তাদের সেবা সরাসরি গ্রহন করতে পারছে না। বিগত দিনের মত ভাগ বন্টনে মাধ্যমে তাদের কাছে যা যাচ্ছে তাই নিয়ে চুপ করে থাকতে হচ্ছে।
জানাযায়, ১৭ টি ইউনিয়ন একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত এ উপজেলায় সরকার পতনের পর স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অপসারণ এবং যারা আছেন তাদের অব্যবহি ও অনুপস্থিত থাকার কারনে বর্তমান যিনি ইউএনও সর্বোপরি তার উপরেই সকল দায়িত্ব। এছাড়া উপজেলার প্রায় ২’শ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দেখবাল করার দায়িত্ব তার। স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচন না হওয়া অবদি তার উপরই এই দায়িত্ব থাকবে বলে মনে করা যায় এখন পর্যন্ত। যে কারনে তার দপ্তরে এতদিন ক্ষমতার সাধ না পাওয়া একটি পক্ষ সব সময় ভিড় করছেন। এবং নানাবিধ তদবির করে চলেছেন। সম্প্রতি খাদ্য অধিদপ্তরের ওএমএস এবং খাদ্য বান্ধব ডিলার নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে হামলা শিকার হন উপজেলার এক কর্মচারী। পরে ডিলার নিয়োগ লটারির মাধ্যমে করার বিধি থাকলেও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে সেটি নিজেদের ভিতর ভাগ বন্টন করে নেওয়া হয়েছে। উপজেলার জনগণের জন্য আসা গভীর নলকুপ থেকে শুরু করে, টিআর, কাবিটা, কর্ম সৃজন প্রকল্প সেটিও হয়েছে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে ভাগ বন্টন। বাদ যায়নি পৌরসভা ২ ধাপে প্রায় ১ কোটি ২ লক্ষ টাকার এডিপি টেন্ডারের কাজ নিয়ম অনুযায়ী হয়নি। সেখানে ভাগ বন্টন।
বর্তমানে কোন রাজনৈতিক সরকার নেই। কিন্তু তাদের সুপারিশ আছে সব স্থানে। কিন্তু সেটি সুপারিশ নাকি আদেশ এটাই বোঝা মুশকিল। টিসিবি কার্ড, জন্মকালীন ভাতা, বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক প্রকল্প, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানের সভাপতির চেয়ারের জন্য প্রতিনিয়ত ছুটছেন একটি পক্ষ। যেটি সর্বমহলে প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে। যদি এমনই হবে তাহলে পরিবর্তনটা কোথায়।
এদিকে গত শনিবার হরিহরনগর ইউনিয়ন পরিষদে তারা ঝুলিয়ে দেওয়ার মত ঘটনা উপজেলাব্যাপী নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
যদিও এটা নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিশাত তামান্না একটু ভিন্ন কথা বলছেন, তিনি অভিযোগ বিষটি আমলে না নিয়ে জানান, আমার দপ্তর সবার জন্য উন্মুক্ত। আবদার নিয়ে যে কেউ আসতে পারে কিন্তু সেটি যদি অন্যায় অযৌক্তিক হয় সেটি আমার পক্ষে করে দেওয়া সম্ভব না। আমাকে সকলের মতামতের ভিত্তিতে চলতে হবে। তবে আমাকে সুযোগ দিতে হবে। আমার উপর অনেক দায়িত্ব উপজেলা আয়তনও অনেক সুতরাং যদি এতো বেশি আবদার নিয়ে আমার কাছে আসা হয় সেটিকে আমি এক প্রকার যন্ত্রণা দেওয়া মনে করি। আমাকে আগে গুছিয়ে নিতে হবে। প্রতিটি সেক্টরে প্রতিনিধি ঠিক করা হবে। তারাই কাজ গুলো করবে সেই সময় আমাকে না দিয়ে যদি সবাই আমার তাছে চাইতে থাকে তাহলে সেটি মেনে নেওয়া সম্ভব না। দেয়ার ক্ষমতা আমার আছে কিন্তু সেটি যথাযথ পক্রিয়ার মধ্য দিয়ে। কারন জণগণের কাছে আমাকে জবাবদিহি করতে হবে।