নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরে ‘মুজিব সড়ক’ লেখা থাকায় প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সাইন বোর্ড নষ্ট ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার সকালে শহরের ঈদগাহ মাঠে জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে যোগ দিতে আসা মিছিল থেকে এসব ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। মুজিব সড়কে অবস্থিত প্রেসক্লাবের সাইন বোর্ড, সরকারি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রসহ কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সাইন বোর্ড নষ্ট করে তারা। কারণ ওই সাইন বোর্ডে মুজিব সড়ক লেখা রয়েছে। এদিকে মুজিব সড়কে বিভিন্ন স্থাপনার সাইনবোর্ড ভাঙচুর ও নাম কেটে ফেলার এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এরপর থেকেই বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ সমালোচনা করছেন। শুক্রবার সকালে যশোর টাউনহল ময়দানে জেলা জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলনে আসা বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা মুজিব সড়কে অবস্থিত প্রেসক্লাবের সাইন বোর্ডে ‘মুজিব সড়ক’ নাম থাকায় জামায়াতের কর্মী সমর্থকেরা সাইন বোর্ডে মুজিব লেখা অংশ কেটে নিয়ে গেছে। এরপর সরকারি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র, এই সড়কে অবস্থিত বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে মুজিব লেখা অংশ ভাঙচুর ও কেটে ফেলে নেতাকর্মীরা। মুজিব সড়কে বিভিন্ন স্থাপনার বিলবোর্ড ভাঙচুর ও নাম কেটে ফেলার এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে নিজেকে জামায়াতের কর্মী দাবি করে তিনি প্রেস ক্লাবের সাইনবোর্ডে মুজিব শব্দটি ব্লেড দিয়ে কেটে ফেলেন। ভিডিওটিতে তিনি বলতে থাকেন, এদেশে মুজিব বলে কোন শব্দ থাকবে না। এরপর থেকেই বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ সমালোচনা করছেন। যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক এইচ আর তুহিন তার ফেজবুকে ভিডিওটি শেয়ার করে সমালোচনা করে লিখেছেন, এই ভদ্রলোক প্রেসক্লাব যশোরের সাইন বোর্ডের মুজিব সড়ক লেখার অংশে মুজিব শব্দটি ব্লেড দিয়ে কেটে দিয়েছেন। আমার প্রশ্ন : সরকার এই সড়কের নাম কি পরিবর্তন করেছে? আপনি এসেছেন জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে, আপনার কাছে ব্লেড কেন? আমি নিশ্চিত সড়কের নাম পরিবর্তন করেনি সরকার। তাহলে নাম কেটে দেয়ার আপনি কে? উগ্রতা একটু থামাও। মনে রেখো, দেশে মানবতা, সাম্যের, সম্প্রীতি, সহবস্থান… চেতনার মানুষ মারা যায়নি। একে আইনের আওতায় আনা হোক। এই বিষয়ে প্রেস ক্লাব যশোরের সাধারণ সম্পাদক এসএম তৌহিদুর রহমান বলেন, জামায়াতের কর্মী সম্মলনে এসে প্রেসক্লাবের বিলবোর্ডে মুজিব শব্দটি কেটে নিয়ে গেছে। এটি আসলেই ঘৃণিত কাজ। আমরা জেলা জামায়াতের শীর্ষনেতাদের বিষয়টি জানিয়েছি। তারা আমাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছে, একই সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন। অভিযোগের বিষয়ে যশোর জেলা জামায়াতে ইসলামীর সহকারি সেক্রেটারি গোলাম কুদ্দুস বলেন, এটা আমার নলেজে নেই। এমনটা তো হওয়ার কথা না। এমন কোনো নির্দেশনাও ছিলো না। শেখ মুজিবের নাম থাকতেই পারে। তাই বলে তো কোনো প্রতিষ্ঠানের সাইন বোর্ড ক্ষতিগ্রস্ত করা যাবে না। এমনটা হলে যারা করেছে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্খা নেওয়া হবে। যশোর কোতয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিষয়টি শুনেছি। কেউ অভিযোগ দেয়নি, অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রেসক্লাব যশোরের সাইনবোর্ড কাটা নিয়ে শুক্রবার রাত ৭টার দিকে ক্লাবে এসে দুঃখ প্রকাশ করেছেন জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক গোলাম রসুল। এসময় তিনি সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান। এসময় জামায়াত নেতা রেজাউল ইসলাম, শামসুজ্জামানসহ বিভিন্ন স্তরের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।