নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরের শার্শায় ভিজিডির চাল উদ্ধারের ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রভাবিত করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বিএনপির একটি গ্রুপ। চাল উদ্ধারের ঘটনাকে চাল ছিনতাই বলে প্রচার চালিয়ে ফায়দা নিতে চায় ওই কুচক্রি মহলটি। ওই ঘটনাকে শার্শা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক রাকিবুল হাসান রিপনের পদ স্থগিত করেছে সংগঠনটি। আর এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনেরগুলো মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ১৯ ডিসেম্বর শার্শার ৮ নম্বর বাগআঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ভিজিডির ২০ বস্তা চাল উত্তোলন করে বাড়ি ফিরছিল তাছলিমা খাতুনসহ বেশ কয়েকজন নারী। এসময় বাগআঁচড়া টু নাভারণ সড়কের পাশে ইসমাইল হোসেনের চাতালের সামনে পৌছালে কয়েকজন যুবক তাদের চাল নিয়ে যেতে বাধা দেই। ওই সব যুবকরা চালগুলো জব্দ করে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করে। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ওই চালগুলো পাঠানোর সময় স্থানীয় এক বিএনপি নেতার কার্যালয়ের সামনে পৌছালে তিনি তা আটক করে রাজনীতির কুটকৌশল চালান। তিনি থানা পুলিশসহ আগে থেকে সেট করা লোক দিয়ে রাজনীতির চাল চালেন। পরে তাছলিমা খাতুন বাদী হয়ে ৫ জনের নাম উল্লেখ করে শার্শা থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন। মামলার আসামিরা হলেন বাগআঁচড়া হল পট্টির ইসমাইল হোসেনের ছেলে মাসুদ ও রনি, একই এলাকার ফায়েজ পাটোয়ারি ছেলে ফারুক হোসেন, আব্দুল মজিদের ছেলে তহিদ হোসেন ও বাগআঁচড়া ৭ মাইল এলাকার সুরত আলীর ছেলে উজ্জ্বল। বাদী তাছলিমা খাতুন জানান, রাকিবুল হাসান রিপন নামে তিনি কাউকে চেনেন না। এ নামে কেউ তাদের চাল ছিনতাইয়ের সাথে জড়িত ছিল না। অন্য কেউ তার নাম ব্যবহার করতে পারে। আমি যাদের নামে অভিযোগ করেছি মূলত তারাই চাল ছিনতাই সাথে জড়িত ছিলো। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আব্দুস সবুরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চাউল ছিনতাই বা লুন্ঠনের ঘটনায় রাকিবুল হাসান রিপন নামে কারো নাম নেই। বাদী অভিযোগ নাই। এক প্রশ্নের জাবাবে তিনি বলেন, সাংবাদিকরা কিভাবে রাকিবুল ইসলাম রিপনের নামে সংবাদ দিলো তা আমি জানি না। ওই সংবাদ আমি দেখেছি। সংবাদের আমার কোন ভাষ্য নেই। তারা আন্দাজে লিখেছে। স্থানীয় বাগআঁচড়ার বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম বলেন, ওই দিন যারা চাল নিয়ে যাচ্ছিলেন তারা একাধিকবার চাল নিয়ে যাওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে সন্দেহ হয়। বিগত স্বৈরাচার ফ্যাস্টিট হাসিনার আমল থেকে এই চালের সুবিধা ভোগ করে আসছিলেন। কিন্তু এলাকার অনেক দরিদ্র পরিবার এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছিলেন। তারা ৫ আগস্টের পরর স্থানীয় বিএনপির নেতাদের কাছে চালের দাবি করে আসছিলেন। এই চাল বিএনপি ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উদ্ধার করে। কিন্তু বিগত ফ্যাস্টিট সরকারের সুবিধা ভোগী বিএনপির এক নেতা ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করে। তিনিই অপপ্রচারে লিপ্ত হন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বিএনপির এক নেতা জানান, রাকিবুল হাসান রিপন একজন সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান। তার দাদা ও বাবা আব্দুর রাজ্জাক বাগআঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন। এখানে বিএনপির দুটি গ্রæপ রয়েছে। যে কারণে তাকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য তার নাম জড়িয়ে মিথ্যা বানোয়াট অপপ্রচার করা হয়েছে। এছাড়াও রাকিবুল হাসান রিপন ছাত্র জীবন থেকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র সহযোগী সংগঠন ছাত্রদল, যুবদল, বর্তমানে স্বেচ্ছাসেবক দলের রাজনীতির সাথে জড়িত। বর্তমানে সে শার্শা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক এর দায়িত্ব পালন করছেন। বাগআঁচড়ার ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক আসাদুজ্জামান মিঠু বলেন, শার্শা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক রাকিবুল হাসান রিপন একটি ভালো ছেলে। তার বাপ-দাদারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলো। বিগত ১৭ বছর বাগআঁচড়ায় তারাই বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় ভ‚মিকা রেখেছে। সব আন্দোলনে তার ভ‚মিকা অগ্রগণ্য ছিলো। অভিজাত পরিবারের ছেলে কোন খারাপ কাজ করতে পারে না। একটি স্বার্থন্বেষী মহল রাজনীতির কুটকৌশলে এই অপপ্রচার চালিয়েছে। রিপনের নামে যেসব অপপ্রচার করা হয়েছে তার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান তিনি। শার্শা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আমির আব্বাস বলেন, আমার কাছে আপনারা (সাংবাদিকরা) না শুনেই নিউজ করে দিয়েছেন। মামলার ওর নাম নেই। আমি শুনেছি ও খুব ভালো ছেলে। ওর পরিবারও ভালো। একটা ভালো ছেলের নামে এভাবে নিউজ করা ঠিক হয়নি। যাচাই-বাচাই না করেই এভাবে একটি ভালো ছেলেকে হেয় করা ঠিক হয়নি। আবার দলের পক্ষ থেকে তার পদ স্থগিতও ঠিক করেনি। আমার কাছ থেকে এসে মামলার কপি নিয়ে যাক।