মোঃ শফিকুল ইসলাম,যশোর

যশোরে ভাইরাল হওয়ায় সেই ভিডিওটি মূলত বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার ‘নাটকের দৃশ্য’। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) যশোরে রাজারহাট জামিয়া ইসলামীয় মাদ্রাসা’র বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় ফিলিস্তিন ও হামাসে যুদ্ধের অংশ বিশেষ উপস্থাপন করে শিক্ষর্থীরা। পরে দেশজুড়ে ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়। ৫ মিনিট ৫০সেকেন্ডে ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, মুখ ঢাকা একজন আরবি ভাষায় বক্তব্য দিচ্ছেন। তার পাশে দুই জন কালো কাপড়ে মুখ ঢেকে ‘সশস্ত্র গার্ডের’ মতো দাঁড়িয়ে আছেন। মঞ্চের আশপাশে বেশ কয়েক জনকে বক্তব্য শুনতে দেখা যাচ্ছে। এরই মধ্যে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। তবে এ ভিডিও ব্যানারে দেখা যাচ্ছে যশোরে রাজারহাটে জামিয়া ইসলামীয় মাদ্রাসা’র বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান। আর এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মুফতী লুৎফুর রহমান ফারুকী।যশোর জামিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল ও শিক্ষা সচিব মুফতি মাগফুর রহমান জানিয়েছেন, মাদ্রাসার বার্ষিক আঞ্জুমানের (প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান) সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী মানুষের লড়াই-সংগ্রামের বিষয়টি অভিনয় করিয়ে দেখিয়েছেন। এটি অভিনয় ছাড়াই কিছুই নয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, যশোর শহরতলীর রাজারহাট বিহারি কলোনি এলাকায় ২০১২ সালে যশোর জামিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। কওমি এই মাদ্রাসায় প্রায় ৫০০ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করেন। এখান থেকে মূলত হাফেজ, মাওলানা ও মুফতি ডিগ্রি দেওয়া হয়। মাদ্রাসার শিক্ষা সচিব মাগফুর রহমান বলেন, ‘এই মাদ্রাসায় প্রতি বছর শিক্ষার্থীদের নিয়ে বার্ষিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। সেখানে যারা উপস্থিত বক্তৃতা, হামদ-নাত, গজল ও অভিনয়ে ভালো করে তাদের পুরস্কৃত করা হয়। গত ১৭ ডিসেম্বর এই মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ছাত্ররা ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী মানুষের পক্ষে অভিনয় করে দেখান।’ মুখ ঢেকে ‘সশস্ত্র গার্ডের’ মতো দাঁড়িয়ে থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তাদের হাতে থাকা অস্ত্রগুলো কাঠ ও শোলা দিয়ে তেরি। আসলে এটি অভিনয় ছাড়া অন্য কিছু নয়।’ এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মুফতি লুৎফুর রহমান ফারুকী বলেন, ‘১৬ ডিসেম্বর এই মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে আজীবন সদস্যদের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই মঞ্চেই বার্ষিক আঞ্জুমানের আয়োজন করা হয়। আঞ্জুমানে শিক্ষার্থীদের প্রতিভা বিকাশ হয়। এতে যারা ভালো করে তাদের পুরস্কৃত করা হয়। বিষয়টি কোনও খারাপ উদ্দেশে নিয়ে করা হয়নি।’ যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘ভিডিওটি ফেসবুকে দেখেছি। মাদ্রাসার ছাত্রদের একটি প্রতিযোগিতার অংশ এটি। তারা ডামি অস্ত্র ব্যবহার করে অভিনয় করেছেন।’ যশোর জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম বলেন, যশোরে ভাইরাল হওয়ায় ভিডিওটি মূলত বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার ‘যেমন খুশি তেমন সাজো’ অনুষ্ঠানের ভিডিও। জঙ্গী সংগঠনের কোন বিষয় না। তাদের হাতে থাকা অস্ত্রগুলো কাঠ ও শোলা দিয়ে তৈরি।