ঝিনাইদহ অফিস
ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডুতে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে দু’পক্ষের সংঘর্ষ হয়। এতে মহিলাসহ ৩জন আহত হয়। এঘটনায় দু’পক্ষ থানায় পাল্টা-পাল্টি মামলা দায়ের করেন। সেই সাথে এক পক্ষ আরেক পক্ষকে ঘায়েল করতে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য প্রদান করছেন। জানা গেছে,উপজেলার কাপাসাটিয়া ইউনিয়নের কিসমত ঘোড়াগাছা গ্রামের আওয়ামীলীগ কর্মী শাহীন কবীর এবং তার ভাই বসির উদ্দিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয়ে অফিস সহকারী পদে চাকুরি করেন। সেই ক্ষমতার দাপটে সেটেলমেন্ট অফিসে অস্থায়ী পদে চাকুরি করার সুবাদে শাহীন কবীর ও তার পরিবারের সদস্যরা গ্রামের কাউকে কোনদিন পাত্তা দিতেন না। যখন যা মনে চাইতো তখন তিনি ও তার পরিবার তাই করতো। ৮বছর আগে শাহীন কবীরের বাড়ির পাশে শিরিনা খাতুন নামে এক নারী বাড়িসহ জমি বিক্রি করে দেন। ওই জমি গ্রামের আনোয়ার হোসেন ও মতিয়ার রহমান ক্রয় করে ওই নারীর কাছ থেকে রেজিষ্ট্রি করে নেন। কোন উপায় না পেয়ে সেটেলমেন্ট অফিসে চাকুরি করার সুবাদে শাহীন কবীর কৌশল খাটিয়ে ২৬শতক জমি আরএস রেকর্ড করে জমি দখলে নিয়ে নেন। ওই সময় জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে থানায় শালিশও হয়েছে। কিন্তু তাদের ক্ষমতার কাছে পরাস্থ হয়ে যান বিএনপি সমর্থিত আনোয়ার হোসেন ও মতিয়ার রহমান। এই ঘটনা নিয়ে গ্রামে দুই গ্রুপে বিভক্ত হয়ে দ্ব›দ্ব চলতে থাকে। এরই মাঝে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ৫আগষ্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতন হয়ে যায়। এরপর আনোয়ার হোসেন ও মতিয়ার রহমান ওই জমির দখল নেওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় শাহীনের পরিবার দখল নিতে যাওয়া ব্যক্তিদের বাঁধা দিতে যায়। সেসময় ধাক্কা-ধাক্কা ও সংঘর্ষের এক পর্যায়ে মহিলাসহ ৩জন আহত হয়। এর আগে নিজের শক্তি বৃদ্ধি করতে শাহীন কবীর কিছু কিশোর গ্যাং গ্রুপের ছেলেদের একত্রিত করে রাতে কিসমত ঘোড়াগাছা গ্রামে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অশ্লীল গান বাজনা,গাঁজা সেবক ও খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন কের। এরই প্রতিবাদ করেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি রেজাউল ইসলাম রেজা,ক্যাশিয়ার লিটন বিশ্বাস ও মসজিদ কমিটির সভাপতি গোলাম মোস্তফা। তারা জানান এসব ঘটনা আড়াল করে সাংবাদিকদের কাছে মিথ্যা সত্য দিয়ে সংবাদ পরিবেশন করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সেই সাথে টাকার বিনিময়ে শাহীন কবীর শক্তিশালী পক্ষকে ম্যানেজ করে নানা রকম অপকর্ম করে বেড়াচ্ছেন। এছাড়া শাহীন কবীর নিষিদ্ধ চরমপন্থি দলের সদস্য আনুকে জবাই করে হত্যা ও দুইটা বিষ্ফোরক মামলার আসামী। তবে এসব মামলা আওয়ামীলীগ আমলেই শেষ হয়ে গেছে বলে শাহীন কবীর দাবী করেন। আর শাহীন কবীরের বিরুদ্ধে যেসব ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে তা তিনি অস্বীকার করেছেন। এ ব্যাপারে হরিণাকুণ্ডু থানার ওসি এমএ রউফ বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কিছু পোলাপান গান বাজনা করছিল। গ্রামবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। এনিয়ে ঘটনার সুত্রপাত। আর আমি এথানায় নতুন যোগদান করেছি বিস্তারিত ঘটনা জানা নেই আমার। তবে তদন্ত করে প্রকৃত দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।