কণ্ঠ ডেস্ক
‘ঘটনার ১৫-২০ দিন আগে লাবিব, রবিন, ইমন ও আমার সাথে সজল চাচার দেখা হয়েছিল। এসময় তিনি আমাদের সাথে খারাপ ব্যবহার ও মারপিট করেছিলেন। এরপরই আমরা পরিকল্পনা করি সজল চাচাকে উচিৎ শিক্ষা দিতে হবে। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার দিন সন্ধ্যার পর খোলাডাঙ্গা রেললাইনের পাশে আমরা ওৎ পেতে বসেছিলাম। আমাদের সাথে রমজান, রাজু ফকির, আল আমিন, সুজয়, শাকিল, সুজয় ওরফে বাংলা ছিলো। চাচা আসলেই তাকে একের পর এক ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যাই’-এই স্বীকারোক্তি যশোরের খোলাডাঙ্গায় জামায়াত নেতা ও স্যানেটারি ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলাম সজল হত্যা মামলার প্রধান আসামি স্মরণের।শনিবার আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে এসব বলেছে স্মরণ। আদালতে জবানবন্দি গ্রহণ শেষে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. রহমত আলী স্মরণকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। এর আগে র্যাব-৬ যশোর ক্যাম্পের সদস্যরা শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বাগেরহাটের শরণখোলার এক আত্মীয় বাড়ি থেকে তাকে আটক করে।আদালত সূত্র জানায়, আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে স্মরণ আরও জানিয়েছে, সে পড়াশোনার পাশাপাশি ব্যবসা করে। সজলকে সে চাচা বলে ডাকে। ‘চাচাকে উচিৎ শিক্ষা দেয়ার জন্য’ তারা আসামি ইমনের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে খোড়া কামরুলের সাথে যোগাযোগ করে। ওপাশ থেকে খোড়া কামরুল আশ্বাস দেন কোনো সমস্যা নেই। এরপর তারা ৪ নভেম্বর ছয়টি চাকু নিয়ে আসে। স্মরণের সাথে রমজান, রাজু ফকির, আল আমিন, সুজয়, শাকিল, সুজয় ওরফে বাংলা ছিল। তারা ওৎপেতে বসে থাকে খোলাডাঙ্গা রেললাইনের পাশে। সজলকে সাইকেলে আসতে দেখে রবিন ও ইমন গতিরোধ করতে বাধ্য করে। সাইকেল থামার সাথেই রবিন সজলকে ছুরিকাঘাত করে। এরপর স্মরণও ছুরিকাঘাত করে। এসময় সজল ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় স্বজনকে। পরে অন্যরাও ক্ষিপ্ত হয়ে একের পর এক ছুরিকাঘাত করে সজলকে। পরে তারা সকলেই সুজলপুরে চলে যায়। সেখানে তপু নামের এক যুবকের কাছে চাকু জমা দেয়। সেখান থেকে প্রাইভেটকার ভাড়া করে বাগেরহাটের এক আত্মীয় বাড়িতে আশ্রয় নেয় স্মরণ। পরে লাবিবের বোনের কাছ থেকে সে জানতে পারে সজল মারা গেছে।গত ৪ নভেম্বর সন্ধ্যা ৭টার দিকে দোকানের বেচাকেনা করে এশার নামাজ আদায়ের জন্য বের হন সজল। সার গোডাউনের পেছনের আইয়ুব গাজীর বাড়ির সামনে পৌঁছালে স্মরণসহ ১৩/১৪জন তার পথ আগলে ধরে। এরপর কিছু বুঝে উঠার আগেই ধারাল অস্ত্র দিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। সে সময় তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে আসামিরা পালিয়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।ওই ঘটনায় নিহতের বাবা আনোয়ার হোসেন ইদু বাদী হয়ে ১৬ জনের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। ওই মামলার আসামিদের মধ্যে ডিবি পাঁচজন ও র্যাব প্রধান পরিকল্পনাকারী স্মরণকে আটক করে কোতোয়ালি থানায় সোপর্দ করে। পরে তাকে শনিবার আদালতে সোপর্দ করা হলে বিচারক জবানবন্দি গ্রহণ শেষে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।