যশোর প্রতিনিধি
যশোরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, জেলার প্রথম অভিজাত শপিং কমপ্লেক্স জেস টাওয়ারের মালিক মতিয়ার রহমান বাবু ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। মঙ্গলবার ভোর ৪ টার দিকে ঢাকায় বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর। সদা হাস্যোজ্জ্বল এই মানুষটি ছিলেন যশোরের খুবই পরিচিত মুখ। তিনি মতিয়ার বাবু নামেই পরিচিত ছিলেন। এদিন বিকেল নাগাদ তার মরদেহ যশোরে আসবে বলে তার বাল্যবন্ধু ও পরিবারের ঘনিষ্টজন ইঞ্জিনিয়ার শহিদুল হক বাদল জানিয়েছেন। শহিদুল হক বাদল গ্রামের কাগজকে জানান, মতিয়ার রহমান বাবু প্রায় এক সপ্তাহ ধরে জ¦রে আক্রান্ত ছিলেন। চিকিৎসায় যখন তার জ¦র সারছিল না, তখন তিনি ঢাকার বার্ডেম হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে নানা পরীক্ষার পর তার শরীরে ইনফেকশন ধরা পড়ে। যার প্রভাবে আস্তে আস্তে তার কিডনি ফেইল করতে থাকে। শরীরের প্রেসার ও সুগার কমে যেতে থাকে। যে কারণে তাকে রোববার বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে সোমবার সন্ধ্যায় তার কিডনি ডায়ালাসিসের উদ্যোগ নেন চিকিৎসকেরা। এসময় তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার ভোর ৪টার দিকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন মতিয়ার রহমান বাবু। শহিদুল হক বাদল আরো বলেন, এদিন দুপুর ১২টায় ঢাকার গুলশান আজাদ মসজিদে তার প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর তার মরদেহ যশোরে আনা হবে। পরে বাদ এশা যশোর ঈদগাহ ময়দানে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। মতিয়ার বাবুর পিতা খবিরউর রহমান ছিলেন জেলা নাজির। তারা পাঁচ ভাই ও পাঁচ বোন। ভাইদের মধ্যে দু’জন আগেই মারা গেছেন। তার দুই মেয়ে ও এক ছেলে। সবাই অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী। বড় মেয়ে মাইশা কবির চিকিৎসক। ছোট মেয়ে ও ছেলে অস্ট্রেলিয়ায় বিশ্বাবিদ্যালয়ে চাকরি করেন। স্ত্রীসহ তিনি ঢাকায় অবস্থান করতেন। মাসে দু’একবার যশোরে এসে শহরের রেল রোডের বাড়িতে থাকতেন। মতিয়ার রহমান বাবু ছিলেন এমকে গ্রুপ, পিপল লিজিং এবং যশোর জেস টাওয়ারের চেয়ারম্যান। আবাসন ব্যবসা ছাড়াও তিনি আমদানি-রপ্তানি ব্যবসার সাথে যুক্ত ছিলেন। ইঞ্জিনিয়ার বাদল আরও জানান, মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে মতিয়ার রহমান বাবুরা পুরো পরিববার নিয়ে যশোরের খাজুরায় নিরাপদ আশ্রয়ে ছিলেন। সেই কৃতজ্ঞতাবোধের জায়গা থেকে তিনি খাজুরায় খবিরউর রহমান ডিগ্রি কলেজ নামে একটি ডিগ্রি কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছেন। যশোর শহরের শংকরপুর মুরগীফার্ম গেটের আলহাজ মতিউর রহমান মাদ্রাসারও প্রতিষ্ঠাতা তিনি। তার অর্থায়নে যশোর বালিকা বিদ্যালয়ের (সাবেক নৈশ মাধ্যমিক বিদ্যালয়) নতুন ভবন নির্মিত হয়েছে। এছাড়া, তিনি অংসখ্য মসজিদ, মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন।