মোঃ ইব্রাহিম খলিল
সাতক্ষীরা তালায় আ.লীগ নেতা মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপকর্ম সহ দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, মিজানুর রহমান খাঁ তালা উপজেলার সদর ইউনিয়ন এর শাহাপুর ৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামিলীগ এর তৎকালীন সময় সহঃ সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। অভিযোগ আছে, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সময় আ.লীগ নেতা মিজানুর রহমান ক্ষমতার অপব্যবহার করে জমি দখল থেকে শুরু করে চাঁদাবাজিতে বেপরোয়া ছিলেন। অভিযোগ আছে মিজানুর রহমান ঠিকাদার হওয়ার সুবাদে প্রভাব খাটিয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল “এল,জি,ইডি” থেকে সহসাই কাজ পেতেন। রাস্তার কাজে তার ছিলো ব্যপক অনিয়ম এবং দূর্নীতি। প্রতিটা কাজের মান নিয়ে অসন্তোষ ছিলেন সচেতন মহল সহ সুশীল সমাজের ব্যক্তিরা। নিম্নমানের ইটের ব্যবহার থেকে শুরু করে রাস্তায় বালু ভরাটের নিমিত্তে বালু মহল থেকে বালু ক্রয় না করে জনবসতি এবং ফসলি জমির ভূগর্ভস্থ থেকে অধিক লাভের আশায় বশীভূত হয়ে ড্রেজার মেশিন (বলগেট) দিয়ে বালু উত্তোলন করতো দূর্নীতিবাজ মিজানুর রহমান। সিডিউল অনুযায়ী কাজ না করে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে যেন-তেন ভাবে রাস্তার কাজ করতেন মিজানুর রহমান। তাছাড়া কার্পেটিং রাস্তায় নিম্নমানের পরিত্যক্ত ইটের খোয়া ব্যবহার এবং পিচ ঢালাই কাজে পর্যাপ্ত পরিমাণ বিটুমিন ব্যবহার না করেই কাজ সম্পন্ন করেন মিজানুর রহমান। এদিকে মিজানুর রহমান এর রয়েছে তালা উপজেলা ব্যাপি একটি সন্ত্রাসী সিন্ডিকেট চক্র। যাদের মাধ্যমে মিজানুর রহমান জমি দখল, চাঁদাবাজি সহ বিভিন্ন অপকর্ম হরহামেশাই চালিয়ে যেতেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ভুক্তভোগী ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, ৫ আগষ্ট আ.লীগ সরকার পটপরিবর্তন হওয়ার পূর্বে দলটি ক্ষমতায় থাকাকালীন সময় মিজানুর রহমান তার সন্ত্রাসী সিন্ডিকেট জনগোষ্ঠী দিয়ে তালা শাহপুর গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দাদের বিভিন্ন প্রকার মামলা হামলার ভয়ভীতি, হুমকি ধামকি প্রদর্শন করে ভুক্তভোগী পরিবার প্রতি ১০ হাজার থেকে শুরু করে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করেছে। এই চক্রের মুল হোতা মিজানুর রহমান ও তার আপন সহোদর শাহিনুর রহমান খাঁ। তৎকালীন সময় মিজানুর রহমান ও শাহিনুর রহমান গ্রুপের ভয়াবহ সন্ত্রাসী তাণ্ডবে পুরুষ মানুষ বাড়ি শুন্য হয়ে পড়ে। মিজান ও শাহিন সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে একটি সক্রিয় সন্ত্রাসী জনগোষ্ঠী বিভিন্ন অপরাধ এবং অপকর্মের সাথে প্রকাশ্যে লিপ্ত ছিলো। এই গ্রুপে আছে তৈয়েবুর মোল্যা, আজিজুর মোড়ল, শাহাপুর গ্রামের সজীব মোড়ল, সাত্তার সহ আরো অনেকে।
অভিযোগ আছে, তালা উপজেলার শাহাপুর গ্রামের স্থানীয় জৈনক সিদেম এর জায়গা জোরপূর্বক সন্ত্রাসী সিন্ডিকেট চক্র দিয়ে অবৈধভাবে দখল করে পাকা ঘরবাড়ি স্থাপন করে সেখানে বসবাস করছে মিজানুর রহমান এর সহোদর শাহিনুর রহমান। সন্ত্রাসী সিন্ডিকেটের দুই হোতা মিজানুর রহমান ও শাহিন তালা উপজেলার সদর ইউনিয়নের শাহাপুর গ্রামের বুদু মেম্বারের ছেলে। এছাড়া স্থানীয় অনেক নিরীহ মানুষের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করে আটক করাতেন মিজান, শাহীন গ্রুপ। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী পরিবারকে ছাড়ানোর আস্বস্ত করে গ্রুপটি লক্ষ লক্ষ টাকার প্রস্তাব দিতেন বলেও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন। আ.লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সময় মিজান ও শাহিন গ্রুপের ভয়াবহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, অবৈধভাবে জমি দখল, চাঁদাবাজি, এবং হয়রানির চিত্র এলাকার সাধারণ মানুষের মনে ক্ষতের সৃষ্টি করেছে। মিজান ও শাহিন সিন্ডিকেটের সন্ত্রাসী তান্ডবের কথা মনে হলে সাধারণ মানুষ এখনো আঁতকে ওঠে। এ বিষয় মিজানুর রহমান এর সাথে মুঠোফোনে আলাপকালে তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি কোন আওয়ামী লীগ নেতা ছিলাম না। তাছাড়া আমি কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করিনি। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভাই আমার বিরুদ্ধে নিউজ করবেন না। এ বিষয় শাহিনুর রহমান এর সাথে মুঠোফোনে আলাপের চেষ্টাকালে তার ব্যবহৃত নম্বরটি বন্ধ পাওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।