জাহিদুল ইসলাম জাহিদ
বেনাপোলে তীব্র যানজটের কারণে আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ট্রাক টার্মিনাল ও বাস টার্মিনাল চালু না হওয়ার কারণেই এই অবস্থা বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।সরেজমিনে দেখা যায়, বেনাপোল বেন্দর এলাকার রাস্তার দুই ধারে যানবাহনের দীর্ঘ সারি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা পার হলেও সেইসব গাড়ির চাকা নড়ে না। প্রায় এক মাস ধরে এই অবস্থা চললেও প্রশাসনের কোনো নজরদারি নেই এই দিকে। ট্রাক ও বাস চালকরা কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে বন্দরের প্রধান সড়কের দুই পাশে যেখানে সেখানে খালি গাড়ি কিংবা পণ্য বোঝাই ট্রাক রাখে। এরফলে ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট এলাকা থেকে বাস টার্মিনাল পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তা জুড়ে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজটের।স্থানীয়রা জানান, সরকারি ছুটির দিন ছাড়া প্রায় প্রতিদিনই এমন যানজটের মুখোমুখি হতে হয় তাদের। বেনাপোলে আলাদাভাবে একটি বিশাল ট্রাক টার্মিনাল ও একটি বাস টার্মিনাল ইতোমধ্যে নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু সেগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে না। এ কারণেই এখানে এমন যানজট হচ্ছে। আর সময়মতো পণ্য খালাস করতে না পেরে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন আমদানিকারকরা।আমদানি ও রফতানিকারক ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমরা এই অসহনীয় অবস্থার মধ্যে কাটাচ্ছি। এছাড়াও তিনি বলেন, আমাদের আমদানিকৃত পণ্য খালাসের পর প্রায় তিন থেকে চার ঘন্টা সময় লাগে বেনাপোল বন্দর পার হতে। এতে করে পচনশীল পণ্য নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়। আমরা নির্দিষ্ট সমায়ে গন্তব্যস্থলে পোঁছাতে না পারাই আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে।বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী বকুল মাহবুব বলেন, বেনাপোলে ২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ইতোমধ্যে আলাদাভাবে ট্রাক টার্মিনাল ও বাস টার্মিনাল নির্মাণ করা হয়েছে। টার্মিনাল দুটো ব্যবহার না করার ফলেই যানজটের এই তীব্রতা। আমরা যদি টার্মিনাল দুটো ব্যবহার শুরু করি. তাহলে যানজট শূন্যের কোঠায় আনা সম্ভব। যানজট না কমানো হলে, আমদানি-রফতানি ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্তরা প্রতিনিয়িত ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক রাশেদুল সজীব নাজির বলেন, ট্রাক ও বাস টার্মিনাল চালুর জন্যে আমরা ইতঃপূর্বেই জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় পৌর কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার চিঠি দিয়েছি। এগুলো চালু হলে দীর্ঘদিনের এই যানজটের অবসান হতো। যানজটের কারণে আমদানি-রফতানি ব্যবসায়ও বিরূপ প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এ বিষয়ে যশোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সুজন সরকার প্রতিদিনের কণ্ঠকে বলেন, আমরা সবাইকে নিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে চাই, যাতে উদ্ভূত সমস্যার সমাধান হয়। বাস ও ট্রাক টার্মিনাল যেন সত্যিকার অর্থেই যানজট নিরসনের উপযুক্ত জায়গা হিসেবে বিবেচিত হয়, সেলক্ষ্যে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। উল্লেখ্য,বেনাপোল স্থলবন্দরের আমদানি-রফতানি কার্যক্রমে প্রায় ৭শ যানবাহন প্রতিদিন যাতায়াত করে।