নড়াইল প্রতিনিধি
নড়াইলে আমেনা বেগম (৫৭) নামে এক নারীর হত্যার রহস্য উদঘাটন হয়েছে। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘটনার ৪৪ দিন পর হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন ও আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে সদর থানা পুলিশ। ঘটনাটি সদর উপজেলার বিছালী গ্রামের। হাঁস চুরির অপবাদ দেয়ায় প্রতিবেশী দাদিকে হত্যা করে আসিফ ম্যোল্যা (১৯)। গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এমনটি জানিয়েছে ওই তরুণ।পুলিশ জানায়, গত ৪ আগস্ট রাতে নড়াইল সদরের বিছালী গ্রামের মনির হোসেন মোল্যার স্ত্রী আমেনা বেগম (৫৭) বাড়িতে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। এ ঘটনায় ১২ আগস্ট সদর থানার মামলা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে সদর থানার ওসি মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সাজেদুল ইসলাম এবং এসআই সেলিম মহালদারসহ পুলিশ আমেনা হত্যা মামলার আসামি আসিফ মোল্যাকে (১৯) নিজ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেন। আসিফ বিছালী গ্রামের বাবর আলী মোল্যার ছেলে। এ ছাড়া হত্যার শিকার আমেনা বেগমের লুণ্ঠিত মোবাইল ফোনটি আসিফের কাছ থেকে জব্দ করা হয়।গ্রেপ্তার আসিফ জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে জানান, আমেনা বেগম সম্পর্কে তার (আসিফ) প্রতিবেশী দাদি হন। আমেনার পরিবারের সাথে আসিফদের জমি সংক্রান্ত বিরোধ আছে। এ জমি নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। তবুও দুইপক্ষের মধ্যে কথাবার্তা এবং বাড়িতে যাওয়া-আসা হতো। এরই সূত্র ধরে গত ২৮ জুলাই আমেনা বেগম আসিফদের বাড়িতে যান। এ সময় হঠাৎ করেই আসিফের মায়ের নামে আমেনা বেগম আজেবাজে কথাসহ গালিগালাজ করেন।আমেনার এ ধরণের আচরণে আসিফসহ তার পরিবার ক্ষুদ্ধ হয়। এরপর ২ আগস্ট আমেনার হাঁস চুরি হলে আসিফকে চোরের অপবাদ দেন তিনি। এ ঘটনায় আসিফের মা তাকে (আসিফ) মারপিট করেন। এতে আসিফের আমেনা বেগমের ওপর অনেক রাগ হয়। এরপর আসিফ মোল্যা ৪ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে আমেনা বেগমের বাড়িতে যান। তখন আমেনাদের ঘরের প্রবেশদ্বারে তালা দেয়া ছিল। এ সময় আসিফ আমেনা বেগমকে দাদি বলে ডাক দিলে তিনি প্রবেশদ্বারের তালা খুলে দেন। এরপর আসিফ ঘরের ভেতরে যান। তখন আমেনা বেগম বলেন, তুই বসতি থাক। আমি কয়ডা ভাত খেয়ে নিই। খাওয়া শেষ হলে আমেনা বলেন, আমি শুয়ে পড়ব। অনেক রাত হইছে। তুই আরেকটু বস। তখন আসিফ পেছন থেকে আমেনা বেগমের গলায় গামছা পেঁচিয়ে ধরে। এরপর আসিফ আমেনার পরনের শাড়ি দিয়ে আবার গলা পেঁচিয়ে ধরে। একপর্যায়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় আমেনাকে। এরপর আসিফ আমেনার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নিয়ে সটকে পড়ে। আমেনাকে হত্যার সময় তার পরিবারের কেউ বাড়িতে ছিল না। সদর থানার ওসি মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, আমেনা বেগমকে হত্যা পর থেকে আসিফ আমেনা বেগমের মোবাইল ফোন ব্যবহার করছিল। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় আমরা আসিফকে সহজে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছি। জমি নিয়ে দুই পরিবারের মাঝে দ্বন্দ্বও চলছিল।