রেজওয়ানুল ইসলাম বাপ্পি
ঝিনাইদহ জেলা পরিষদের হিসাবরক্ষক আলমগীর হুসাইনের সম্পদের কথা শুনলে যেকোন মানুষ অবাক হতে পারে। সামান্য একজন তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারীর আঙুল ফুলে কলাগাছ হবার বিষয় যেন আলাদিনের চেরাগের গল্পের হার মানায়। অথচ এই আলমগীর চাকরিতে ঢোকার আগে সে মানুষের বাড়িতে লজিং থেকে টিউশনি করিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতো বলে জানা যায়। আলমগীরের সম্পদের অনুসন্ধান করতে গিয়ে চোখ কপালে উঠে যায় অনুসন্ধানী টিমের। কি নেই আলমগীরের বাড়ি,গাড়ি, জায়গা জমি আর নগদ টাকা কোন কিছুরই অভাব নেই। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় শহরের বাসটার্মিনালের পাশে ঢাকা মহাসড়ক সংলগ্ন হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সামনে ১০ শতক জমির উপর গড়ে তুলেছেন ৫ তলা সুউচ্চ আলিশান বাড়ি। বাড়ির পেছনে রয়েছে অনেক জমি। বাড়িটি দেখলে মনে হবে এটি কোন বড় শিল্পপতি কিংবা বড় ব্যাবসায়ীর বাড়ি। না এটাই হলো জেলা পরিষদের হিসাবরক্ষক আলমগীর হুসাইনের বাড়ি। পুরো বাড়ির দেয়ালে টাইলস করা আর বাড়ির চারপাশে সিসি ক্যামেরা লাগানো। সবমিলিয়ে দু’কক্ষ বিশিষ্ট বাড়িতে মোট দশটা ফ্ল্যাট রয়েছে। স্থানীয়দের দাবি বাড়িটির বর্তমান আনুমানিক বাজারদর প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকার উপরে। এছাড়া ঝিনাইদহ শহরের মর্ডাণমোড় এলাকায় আলমগীরের আরো একটা দোতলা বড় বাড়ি আছে অবশ্য এই বাড়িটা আলমগীর তার শশুর বাড়ি বলে দাবি করে। তবে স্থানীয়রা জানান, বাড়িটি আলমগীর করেছে কিন্তু শশুড়ের নাম বলে।
শহরের একাধিক জায়গায় গোপনে কিনে রেখেছেন জমি। আর নগদ টাকা সোনা দানার বিষয়তো পড়েই রইল। এরপর গ্রামের বাড়িতে করেছেন অঢেল সম্পদ। বিলাসী জীবন যাপনের জন্য বাসায় রয়েছে এয়ার কন্ডিশন(এসি) দামি দামি আসবাবপত্র। চলাচলের জন্য ব্যবহার করেন ব্যক্তিগত প্রাইভেট কার। অনেক সম্পত্তি সে স্ত্রীর নামে করেছেন বলে জানা গেছে। আলমগীরের মতো একজন ১৪তম গ্রেড এর কর্মচারী এসব সম্পদ দেখে ঝিনাইদহের সাধারণ মানুষের মাঝে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। আলমগীরের সম্পদের বিষয়ে জেলা পরিষদের বেশ কয়েকজন নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মচারীরা বলেন,অনেক দিন ধরে আলমগীর এখানে চাকরি করছেন। দীর্ঘদিন এক জায়গায় চাকরি করার কারণে বিভিন্ন সময়ে সে পরিষদ থেকে নানা প্রকার অনিয়মের মাধ্যমে এসব সম্পদ করেছেন। স্থানীয় লোক হবার কারণে তাঁর বিরুদ্ধে কেউ কথা বলে না। বিলাস বহুল বাড়ি আর অঢেল সম্পদের বিষয়ে জেলা পরিষদের হিসাবরক্ষক আলমগীর হুসাইনের কাছে জানতে চাইলে সে জানান, জেলা পরিষদে চাকরি করি পুরো জেলায় তো আমাদের। আমি কি বড় লাট সামান্য একটা বাড়ি করেছি টাকা জমিয়ে। বাড়ি ছাড়া আমার তেমন কোন সম্পদ নেই। এসব কথা কি আর মোবাইলে হয় অফিসে আসেন সরাসরি কথা বলবো। আলমগীর হুসাইনের দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদ গড়ার বিষয়ে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ডক্টর হারুন-অর রশিদের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি নতুন দায়িত্ব নিয়েছি। কেউ যদি অবৈধ ভাবে সম্পদ অর্জন করে তাহলে সেটা আমরা তদন্ত করে দেখবো যাতে জেলা পরিষদের কোন ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন না হয়।