আসাদুর রহমান: অন্ধ ও প্রতিবন্ধীরা সমাজের বোঝা নয়। তারা সমাজ এবং দেশের উন্নয়নেরও অন্তরায়। যথাযথ পরিচর্যার মাধ্যমে তাদেরকে দক্ষ জনশক্তিতে পরিণত করে যে কোনো উন্নয়নে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ত করা যেতে পারে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। প্রতিবন্ধিতা কোনো রোগ নয়। এটি জীবনের একটি অবস্থা মাত্র। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা যে কোনো ধরনের উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে বলে মনে করেন যশোরের শার্শা উপজেলার দেশ সেরা উদ্ভাবক, সমাজ সেবক, মানবতার ফেরিওয়ালা দরদী মিজান।
শুক্রবার দুপুরে জন্মান্ধ ও শারীরিক ভাবে দুই বিশেষ প্রতিবন্ধীর মাঝে উন্নত মানের ক্রেষ্ট বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। এসময় তিনি আরো বলেন, প্রতিবন্ধীদের যথেষ্ট মেধা বা প্রতিভা রয়েছে। শুধু প্রয়োজন, তাদেরকে পরিচর্যা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তিতে পরিণত করা। প্রতিবন্ধী, প্রতিবন্ধিত্ব, প্রতিবন্ধিতা ইত্যাদি শব্দগুলো ব্যবহারের ক্ষেত্রে অর্থগত দিক বিবেচনায় রেখে সেগুলো মানুষকে কতখানি প্রভাবিত করে তা ভালভাবে ভেবে দেখা উচিত। কাজেই এসব শব্দ সম্পর্কে আমাদের জ্ঞানার্জন আবশ্যক।
প্রতিবন্ধীদের অসহায়ত্বকে পুঁজি করে এমন কিছু বলা বা মন্তব্য করা উচিত নয়, যা তাদের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করতে পারে কিংবা তাদের অনুভূতিতে আঘাত হানতে পারে। তাদের দিকে দয়া বা করুণার দৃষ্টিতে না তাকিয়ে ভাবা প্রয়োজন তাদের অধিকারের কথা। দান বা করুণামূলক সাহায্যের কথা না ভেবে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও বাস্তবায়নে এগিয়ে আসা জরুরী। পূর্বে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার ও তাদের উন্নয়ন নিয়ে তেমন করে ভাবা না হলেও বর্তমান সরকার প্রতিবন্ধীদের অধিকার সুরক্ষা, উন্নয়ন এবং সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত্ করতে যুগোপযোগী কার্যক্রম গ্রহণ করেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উন্নয়ন ও সার্বিক কল্যাণে নিরলসভাবে যে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন তা বিশ্বব্যাপী প্রশংসীত। সরকারের আন্তরিক ও নিরলস প্রচেষ্টার পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্থাও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নাগরিক অধিকার সুরক্ষা ও তাদের উন্নয়নে এগিয়ে এসেছে। সর্বোপরি একটি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিবান্ধব ভবিষ্যত গড়ার প্রত্যয়ে এগিয়ে আসতে হবে সবাইকে। দুপুরে শার্শার নাভারণে ফ্রি খাবার বাড়িতে খেতে আসা যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার ইজ্জত আলী দফাদারের ছেলে বিশেষ প্রতিবন্ধী আল আমিন ও একই উপজেলার কাটাখাল গ্রামের বিশেষ প্রতিবন্ধী জন্মান্ধ মোঃ হযরত আলীকে এই ক্রেষ্ট তুল দেন উদ্ভাবক মিজান। সমাজে অন্ধ ও বিশেষ প্রতিবন্ধী পাশে থেকে আজ পর্যন্ত কয়েকশ ক্রেষ্ট ও হুইল চেয়ার বিতরণ করেছেন তিনি। প্রতি শুক্রবারের ন্যায় এবারো ২শ প্রতিবন্ধী, পথ শিশু, পাগল ও ভিক্ষুক খাবার খেলো ফ্রি খাবার বাড়িতে।