কালিগঞ্জ(সাতক্ষীরা)প্রতিনিধি: কালিগঞ্জে মহামারী করোনায় ইমারজেন্সি অ্যাকশন প্ল্যান এর ফাইনাল লিস্টে ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের কাছ থেকে উৎকোচ গ্রহনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার দুপুরে ভুক্তভোগী আশরাফুল নামের এক গরুর খামারী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার মনোজিৎ কুমার মন্ডল ও এআই টেকনিশিয়ান আজিজুর রহমান বিপ্লবের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের কথা জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সে উপজেলার মথুরেশপুর ইউনিয়নের দেয়া গ্রামের মৃত শেখ আলাউদ্দিনের ছেলে। লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের ইমারজেন্সি অ্যাকশন প্ল্যান আওতায় ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই অনুযায়ী তার রেজিস্ট্রেশন প্রাপ্ত খামার হিসাবে তালিকায় অন্তরভুক্ত হয়। তারপরও উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার মনোজিৎ কুমার মন্ডলের নেতৃত্বে এআই টেকনিশিয়ান আজিজুর রহমান বিপ্লব বাছাইকৃত খামারিদের রেজিস্ট্রেশনের নাম করে ইউনিয়নের বিভিন্ন জায়গা থেকে ৮’শ থেকে ৩ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে আত্মসাত করেছে। কয়েকজন ভুক্তভোগীরা জানান, সরকারি রেজিস্ট্রেশন প্রাপ্ত খামারিদের ক্ষতিপূরণের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে উল্লেখ করে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মোটা অংকের টাকা আদায় করা হচ্ছে। ভুক্তভোগী খামারিরা উপজেলার মথুরেশপুর ইউনিয়নের চরদহা গ্রামের মৃত শাহাদাত হোসেনের ছেলে শামসুর রহমানের কাছ থেকে ২ হাজার ৫’ শ, আমিনুরের স্ত্রীর কাছ থেকে ৩ হাজার, উজয়মারী গ্রামের মনি মোহন ঘোষের ছেলে শঙ্কর ঘোষের কাছ থেকে ২ হাজার ৫’শ, গনপতি গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে রেজাউল করিমের নিকট থেকে ২ হাজার ৫’শ টাকা করে আদায় করা হয়েছে। ইতিমধ্যে রেজাউল করিমের টাকা ফেরৎ দিয়েছে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা। এ বিষয়ে মথুরেশপুর ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান গাইন বলেন, খামারিদের সরকারির ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার মনোজিৎ কুমার মন্ডল তার সহযোগী এআই টেকনিশিয়ান আজিজুর রহমান বিপ্লবের দিয়ে এলাকার মানুষদের কাছ থেকে উৎকোচ গ্রহণ করছে। জানতে পেরেছি বেশকিছুদিন রেজিস্টেশন বন্ধ আছে। এমনকি গরু নাই মুরগি নাই এমন ব্যক্তি ও এই তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাই। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের এআই টেকনিশিয়ান আজিজুর রহমান বিপ্লব বলেন, প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার নির্দেশে তালিকাভুক্ত খামারিদের নিকট থেকে রেজিস্টেশনের জন্য টাকা আদায় করছি। কয়েকজনের টাকা ফেরৎ দেওয়ার বিষয় জানতে চাইলে সে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। বিষয়টি সম্পর্কে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার মনোজিৎ কুমার মন্ডল বলেন, খামার রেজিস্টেশনের জন্য টাকা আদায় করা হচ্ছে। ইউনিয়নে প্রাণিসম্পদ অফিসের কর্মীরা এই টাকা তুলছে। খামারিদের প্রত্যেকের টাকা ট্রেজারী চালানের মাধ্যমে ব্যাংকে জমা দেওয়া হচ্ছে। কয়েকজন খামারির টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে, তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক রাসেল এর নিকট অভিযোগের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, খামার রেজিস্টেশনের জন্য টাকা গ্রহণ করলে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে বিধিমোতাবেক রশিদ ও কাগজপত্র প্রদান করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ পেয়েছি, বিষয়টি আমি খোঁজ খবর নিয়ে দেখছি। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।