শাহাদাত হোসেন: সাতক্ষীরায় টিসিবির পন্য সাধারন মানুষের মাঝে যা দেয়ার কথা তা না দিয়ে আত্মসাৎ করে বাজারে উচ্চ মুল্যে বিক্রির অভিযোগে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ডিলার সিরাজুল ইসলামকে আটক করেছে।
বুধবার সকালে শহরের আব্দুর রাজ্জাক পার্কে পন্য দেয়ার সময় তাকে আটক করা হয়। এ সময় অভিযানে নেতৃত্ব দেন সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মির্জা সালাহউদ্দিন।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, তার বিরুদ্ধে টিসিবি পন্য নিয়ে নয় ছয়ের অভিযোগ বহুদিনের। শহরের শহীদ আব্দুর রাজ্জাক রাত থেকে সকাল পর্যন্ত তীর্থের কাকের মত লাইনে দাঁড়িয়ে থাকে মধ্যবিত্ত মানুষ পন্য ক্রয়ের জন্য। অথচ পণ্য ক্রয় না করতে পরে অবশেষে ফিরে যায় খালি হাতে। অল্প কিছু লোককে মালামাল দিয়েই শেষ হয়ে গেছে বলে জানিয়ে দেন ডিলার। এই ভোগান্তির অবসান ঘটাতে টিসিবি ডিলার আয়ুব এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারী সিরাজুল ইসলামকে হাতেনাতে আটক করে পুলিশ। সাধারণ মানুষের মাঝে যে পরিমান টিসিবি পন্য বিক্রির কথা তিনি তা না দিয়ে তার প্রায় অর্ধকের বেশী আত্মসাৎ করে তিনি দীর্ঘদিন ধরে বাজারে উচ্চ মুল্য বিক্রি করে আসছিলেন বলে জানিয়েছেন ভুক্তভুগীরা।
পণ্যের বরাদ্দ পত্র অনুযায়ী বুধবার তালিকায় চিনির পরিমান ৩০০ কেজি থাকার কথা থাকলেও স্পটে গিয়ে দেখা যায় রয়েছে মাত্র ১৯৪ কেজি, যা পরিমান ১০৬ কেজি কম। একই ভাবে মসুরের ডাল ৭০০ কেজি থাকার কথা থাকলেও রয়েছে মাত্র ২০২ কেজি, যা পরিমান ৪৯৮ কেজি কম। পেঁয়াজ ৭০০ কেজি থাকার কথা থাকলে রয়েছে মাত্র ৪১৩ কেজি, যা পরিমান কম ২৮৭ কেজি। সোয়াবিন তেল ৮০০ লিটার থাকার কথা থাকলেও রয়েছে ৭৪০ লিটার, যা পরিমান কম রয়েছে ৬০ লিটার।
অভিযুক্ত ডিলার সিরাজুল ইসলাম জানান, মালামাল নিয়ে আসার পথে জেলা নাজির ও সিটি কলেজের মোড়ে কিছু লোকজনের মালামাল দিয়ে এসেছি যার ফলে নির্ধারিত মালামাল থেকে কিছু কম দেখাচ্ছে।
সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মির্জা সালাহউদ্দিন জানান, অনেক দিন থকই খবর পাচ্ছিলাম জনগনর কাছ বিক্রির জন্য নির্ধারিত পরিমান পেঁয়াজ, চিনি, তেলসহ বিভিন্ন মালামাল নিয়ে আসার কথা থাকলেও কম পরিমান মালামাল এনে অর্ধকের বেশী জনগনকে খালি হাতে ফেরত দিচ্ছিলো টিসিবি ডিলার আয়ুব এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারী সিরাজুল ইসলাম। সেই খবরের ভিত্তিতে বুধবার সকালে পুলিশ স্পটে অবস্থান নেয় এবং প্রথম কি পরিমান মালামাল থাকার কথা সেই তালিকা নেন এবং আছে কি পরিমান তা চেক করে ডিলারের বিশাল কারসাজি ধরে ফেলেন তিনি। এটি সরাসরি জনগন ও রাষ্ট্রের সাথে প্রতারণা। রাষ্ট্র ও জনগনের সাথে এই প্রতারণার জন্য এ ডিলারের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থ্য গ্রহনের প্রক্রিয়া চলছে বলে তিনি আরো জানান।