শার্শা প্রতিনিধি :যশোরের শার্শা কায়বা ইউনিয়নের বিতর্কিত চেয়ারম্যান হাসান ফিরোজ আহমেদ টিংকুর বিরুদ্ধে আবারো অনিয়ম ও ঘুষ দূর্নীতির মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে ৭৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ফলে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে এলাকাবাসী। বিস্ফোরনমুখ অবস্থা বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে। জানাগেছে, শার্শা উপজেলার কায়বা বাইকোলা ওসমানীয়া দাখিল মাদ্রাসার সভাপতি হিসাবে ইউনিয়নের বিতর্কিত চেয়ারম্যান হাসান ফিরোজ আহমেদ টিংকু দায়িত্ব নেওয়ার পর অনিয়ম ও ঘুষ দূর্নীতির মাধ্যমে ৩ জন শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছেন। কিন্তু মাদ্রাসার ফান্ডে একটি টাকাও জমা না দিয়ে ৪৫ লাখ টাকা আত্মসাত করেছেন তিনি। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে মহিষা পীর আব্দুস সোবহান আলিম মাদ্রাসায় ৪জন শিক্ষক ও ১জন কম্পিউটার অপারেটর নিয়োগ দিয়ে ২৮ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। মহিষা পীর আব্দুস সোহবান আলিম মাদ্রাসায় সভাপতি আব্দুস সালামের স্ত্রীকে কম্পিউটার অপারেটরের পদটি দেওয়ার কথা বলে তাকে নিজের পক্ষে নিয়ে নেয় চেয়ারম্যান টিংকু। পরে লৌহমর্ষক কাহিনী তৈরি করে বলির পাঠা করে তাঁরই অনুগত মাদ্রাসার সভাপতি আব্দুস সালামকে।
উপজেলার মহিষাপীর আব্দুস ছোবহান আলীম মাদ্রাসার সভাপতি আব্দুস সালাম নিয়োগ পরীক্ষায় পিস্তল ঠেকিয়ে পরীক্ষার চূড়ান্ত শিটে সই নেয়া ও অর্থ বাণিজ্য অভিযোগ করেন অত্র মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল সাইফুল রহমান আজমীর বিরুদ্ধে।সব অভিযোগ ভিন্ন দিকে নাটকীয় রুপ নিচ্ছে।
অভিযোগকারী মাদ্রাসার সভাপতি আব্দুস সালামের নিকট অস্ত্র ও নিয়োগ বাণিজ্য নিয়ে এই নাটকীয় বিষয় জানতে চাইলে বলেন, আমার স্ত্রী ফেল করার কারনে আমি মানসিক ভাবে দুশ্চিন্তা ছিলাম যার কারনে আমি শুধু মাত্র মাদ্রাসার পিন্সিপাল এর বিরুদ্ধে পিস্তল ঠেকিয়ে সই নেয়ার মিথ্যা অভিযোগটি এনেছিলাম। স্থানীয় চেয়ারম্যান হাসান ফিরোজ টিংকু’র বিরুদ্ধে আমার কোন মন্তব্য ছিলো না।
মাদ্রসার পিন্সিপাল সাইফুর রহমান আজমী জানান, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে আমি মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটি’র সভাপতি বুকে পিস্তল ঠেকিয়ে পরীক্ষার চূড়ান্ত শিটে সই নিয়েছি এটা মিথ্যা এবং বানোয়াট কথা তার স্ত্রী পরীক্ষায় ফেল হওয়া চাকরি না পাওয়ায় আমার বিরুদ্ধে এসব মিথ্যা অভিযোগ করেছে।শিক্ষক নিয়োগে কোন অর্থের লেনদেন হয়নি।অস্ত্রের বিষয় তিনি বলেন আমি কোন অস্ত্র চিনি না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সুপার সাহেব নিজে এই প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা রাঘব বোয়াল। সে জামাতের একানিষ্ঠ একজন কর্মী। এলাকার অনেক মাতুব্বরকে সে ম্যানেজ করে এ নিয়োগ বানিজ্য করে। তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না।তিনি যে অস্ত্র সহ সন্ত্রাসী দল নিয়েছিলেন তারা কে বা কারা। তার বুদ্ধির কৌশল করে সে এক এক রুপ ধারণ করে থাকে।
কায়বা ইউনিয়ন পরিষদ এর চেয়ারম্যান হাসান ফিরোজ টিংকু জানান,সেখানে টাকার লেনদেন হয়েছে কিনা আমি বলতে পারব না। এটা ওই সভাপতি বলতে পারবে। আমার বিরুদ্ধে যে নিয়োগ বানিজ্যের অভিযোগ উঠেছে সেটি সম্পুর্ন মিথ্যা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। অভিযোগকারী সভাপতি নিজেই নিয়োগদান করেছেন। নিয়োগের ব্যাপারে আমার কোন হাত নেই। এটা সভাপতিসহ ম্যানেজিং কমিটি’র কাজ।বাংলাদেশে বসে মক্কায় হজ্ব করা এক না।সামনে নির্বাচন আমার প্রতিপক্ষ গ্রুপ আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ষড়যন্ত্র করছে।
বিশ্বস্ত সুত্রে জানা যায়,অভিযোগকারি সভাপতি দু- দিন যেতে না যেতেই নিজের করা অভিযোগ কি ভাবে বলেন তিনি আমার মাথা ঠিক ছিলোনা।কি বলতে কি বলে ফেলেছি।তিনি তো লেখাপড়া জানা ছেলে ।তিনি তো কোন মানসিক রুগী না।তাহলে কেন এই নিয়োগ বাণিজ্যকে কেন্দ্র করে এখন এ সমস্থ্য অভিযোগ কে নাটকের রুপ মোড় নিচ্ছে।তারা এখন নিজেদের অর্থ লিপ্ছা ও স্বার্থকে ঢাকতে এই অভিযোগ কে মিথ্যা বানাতে চাই।সত্যকে আড়াল করে নিজেরা এখন নাটকীয় করে এক টেবিলে পুনরায় বসতে চান।
উল্লেখ্য,উপজেলার মহিষা পীর আব্দুস ছোবহান আলীম মাদ্রাসার সভাপতি আব্দুস সালাম অভিযোগ করে বলে ছিলেন মাদ্রাসার ৫টি শুন্য পদে নিয়োগ পরীক্ষা হয় গত ১০ অক্টোবর যশোর শংকরপুর একটি কেন্দ্রে। ওই পরীক্ষাটি হওয়ার কথা ছিল যশোর ছাতিয়ানতলা একটি কেন্দ্রে। হঠাৎ একদিন আগে মাদ্রাসার সুপার সাইফুর রহমান বলেন পরীক্ষা কেন্দ্র ডিজি মহাদয়ের প্রতিনিধি সাইফুল ইসলাম বদল করে শংকরপুর নিয়েছে। পরীক্ষা শেষে ফলাফলের চুড়ান্ত তালিকা তৈরী করে আমার স্বাক্ষর চায়। আমি বুঝতে পারি কারসাজি করেএ নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। তখন আমি ওই শীটে স্বাক্ষর করতে আপত্তি জানালে আমাকে একটি কক্ষে চা খাওয়ার কথা বলে সুপার ৮/১০ জন সন্ত্রাসীকে এনে আমার বুকে পিস্তল ঠেকিয়ে গালাগালি করে জোর করে স্বাক্ষর করে নেয়। এ ব্যাপারে আমি থানায় একটি জিডি করেছি।
এবিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে শুনেছি। তবে ঘুষ দূর্নীতি বিষয়ে আমার জানা নেই। এলাকাবাসী ধূর্ত চেয়ারম্যান হাসান ফিরোজ আহম্মেদ টিংকুর বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এনবিআর, দুদক সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। সেই সাথে কায়বা বাইকোলা ওসমানীয়া দাখিল মাদ্রাসা ও মহিষা পীর আব্দুস সোবহান আলিম মাদ্রাসার দূর্নীতি অনিয়মের নিয়োগ বাতিলের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।