স্টাফ রিপোর্টারঃ যৌতুকের দাবিতে দুই গৃহবধূকে নির্যাতন ও মারপিটের ঘটনায় কোতয়ালি মডেল থানায় আলাদা দু’টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। দু’টি নির্যাতনের ঘটনার মধ্যে একটি সদর উপজেলা নরেন্দ্রপুর গ্রামের অপরটি মাহিদিয়া গ্রামে।
সদর উপজেলার জঙ্গলবাধাল গ্রামের মকগুল মিনের মেয়ে মোছা সালমা বেগম (৩৫) মঙ্গলবার রাত ৯ টায় কোতয়ালি মডেল থানায় দায়েরকৃত এজাহারে বলেছেন,যশোর সদর উপজেলার নরেন্দ্রপুর মাষ্টার পাড়ার নওশের মোড়লের ছেলে আবুল হোসেন এর সাথে বিয়ের হওয়ার পর আবুল হোসেন ঘর বাড়ি করার জন্য যৌতুক বাবদ ৫লাখ টাকা দাবি করে নির্যাতন শুরু করে। মেয়ের সুখের কথা ভেবে ৩লাখ টাকা যৌতুক বাবদ প্রদান করে। পরবর্তীতে বাকী ২লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে নির্যাতন করতে থাকে। এর মধ্যে গৃহবধূ সালমা বেগম এক ছেলে ও মেয়ে সন্তান জন্ম দেয়। বর্তমানে ছেলে বিল্লাল (১৮) ও মেয়ে রাবেয়া (১৩)। যৌতুকের জন্য গত ১২ জুলাই সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় সালমা বেগম তার স্বামীর বাড়িতে রান্না ঘরে কাজ করার সময় স্বামী আবুল হোসেন যৌতুক দাবি করে নির্যাতনের এক পর্যায় চুলের মুঠো ধরে জ¦লন্ত চুলায়র মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়। আগুনে মুখ নাক, দুই হাতের কব্জি পুড়ে যায়। গৃহবধূ সালমা বেগমের চিৎকাওে ছোট ভাই আমিনুর,বড় বোন তাছলিমা এগিয়ে আসলে তাদেরকে বকাঝোকাসহ মারপিট করে। ছেলে ও মেয়েদের মায়ের সাথে তার বাপের বাড়িতে তাড়িয়ে দেয়। সালমা বেগমকে গুরুতর আহত অবস্থায় যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। অপরদিকে, যশোর মণিরামপুর উপজেলার ঝাঁপা বাগাডাঙ্গী গ্রামের চান্দ আলী মোল্যার মেয়ে মোছা শিল্পী বেগম সোমবার ১৩ জুলাই রাতে কোতয়ালি মডেল থানায় স্বামী সদর উপজেলার মাহিদিয়া গ্রামের মৃত হেলাল উদ্দিন বিশ^াসের ছেলে কামরুল বিশ^াসের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত এজাহারে বলেছেন, ২০ বছর পূর্বে কামরুল বিশ^াসের সাথে তার বিয়ে হয়। বিয়ের সময় স্বামীকে বিভিন্ন স্বর্ণ গহনা ২ ভরি ওজনের মূল্য ১লাখ টাকা ও বিভিন্ন সাংসারিক ৫০ হাজার টাকা মালামাল প্রদান করে। সংসার জীবনে এক মেয়ে ও এক ছেলে জন্ম গ্রহন করে গৃহবধূ। বিয়ের কিছুদিন পর উক্ত কামরুল বিশ^াস গৃহবধূর কাছে ঘর নির্মাণ বাবদ ৫লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। উক্ত টাকার জন্য নির্যাতন শুরু করলে গৃহবধূ তার বাবা মাকে বললে মেয়ের সুখের কথা ভেবে যৌতুক বাবদ ২ লাখ টাকা প্রদান করে। এরপর পুনরায় বাকী ৩লাখ টাকার জন্য নির্যাতন শুরু করে। গত ১৫ জুন বিকেল ৩ টায় শিল্পী বাড়িতে অবস্থান কালে স্বামী কামরুল বিশ^াস এসে যৌতুকের ৩লাখ টাকা এনে দিতে বলে। টাকা এনে দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে লোহার রড দিয়ে পরে এলোপাতাড়ীভাবে মারপিট করে। গৃহবধূর ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে স্বামীর নির্যাতনের হাত থেকে উদ্ধার করে। গৃহবধূ প্রথমে স্থানীয় চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা নেওয়ার পর বাপের বাড়িতে এসে যশোর জেনারেল হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা গ্রহন করে।