বেনাপোল প্রতিনিধিঃ যশোরের শার্শায় মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যারের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুগল,নিজস্ব ওয়েবসাইট অথবা ফেসবুক পেজের মাধ্যমে অনলাইনে পাঠদান কার্যক্রম শুরু করেছে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কত দিন বন্ধ থাকবে তা নিশ্চিত নয়। তাই প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ অনলাইনে পড়ালেখা চালু রাখার জন্য এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। স্কুল কলেজগুলোতে এই কার্যক্রম চললেও মাদ্রাসায় কোথাও এর তোড়জোড় দেখা যায়নি।
কলেজ, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা সবারই যেহেতু ওয়েবসাইট আছে, তাই সব প্রতিষ্ঠানেই অনলাইনে পাঠদান কার্যক্রম শুরু করার দাবি জানিয়েছেন অভিভাবকরা।তারা বলছেন, যাদের ওয়েবসাইট নেই বা থাকলেও সক্রিয় না, তারা খুব সহজেই ফেসবুকে পেজ খুলে এর মাধ্যমে লেখাপড়া চালু রাখতে পারেন।
শার্শা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হাফিজুর রহমানের কাজে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কত্তৃপক্ষের নির্দেশনা আমরা সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে জানিয়েছি। ইতিমধ্যে বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্লাস নেওয়া শুরু করেছে। এছাড়া সংসদ টেলিভিশনে প্রচারিত ক্লাস এবং সিটি ক্যাবলে প্রচারিত ক্লাস দেখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বেনাপোল কলেজের ইংরেজি শিক্ষক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, মহামারি করোনার কারনে কলেজের শিক্ষার্থীরা যাতে পিছিয়ে না পড়ে, শিক্ষার ভেতরে থাকে তাই ফেসবুক পেজের মাধ্যমে অনলাইনে ক্লাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রতিটি বিভাগের শিক্ষকদের সাথে যোগাযোগ করে তাদের ভিডিও ধারন করে ফেসবুকে প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
অনলাইনে এই ক্লাসের ব্যাপার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কলেজ কর্তৃপক্ষ অনলাইন ক্লাসের সামগ্রিক বিষয়টি দেখভাল করছেন।
শার্শা উপজেলার নাভারন ফজিলাতুন্নেছা মহিলা কলেজ, সরকারি বীরশ্রেষ্ঠ নুর মোহাম্মদ কলেজ, বেনাপোল কলেজ, লক্ষনপুর স্কুল এন্ড কলেজ ও উপজেলা কলেজ কার্যক্রম শুরু করেছে।
মাধ্যমিক স্কুলগুলোর মধ্যে শার্শা সরকারি পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বুরুজবাগান পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, বুরুজবাগান এমএল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বামুনিয়া সোনাতনকাটি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, নিজামপুর হাই স্কুল, ধান্যখোলা হাইস্কুল ও বেনাপোল মরিয়ম মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে কার্যক্রম চলছে, অন্যরাও খুব শীঘ্রই শুরু করবেন বলে জানান হাফিজুর রহমান।
অভিভাবক সোহাগ বলেন, এবার মেয়ে এইচএসসি পরীক্ষা দেবে। করোনায় এখনো পরীক্ষা হলো না। এখন কলেজ নেই, প্রাইভেট নেই, বাচ্চা পড়ালেখাও করছে না। চিন্তায় ছিলাম। অনলাইনে পড়ালেখার উদ্যোগ নেওয়ায় অন্তত কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে।
রকি মাহমুদ বলেন, কলেজ পর্যায়ের সকল শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন আছে। ফেসবুক পেজের মাধ্যমে তারা বাসায় বসে পড়ালেখার সুযোগ পাচ্ছে। কিন্তু গুগল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ওয়েবসাইট অথবা ফেসবুক পেজে থাকার জন্য ডেটা খরচ হয়। গ্রামের সাধারণত শিক্ষার্থীদের পক্ষে এই খরচ বহন করা অনেকটা দুরূহ। তাই ডাটা খরচ কমানোর দাবি জানাচ্ছি।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ‘এটুআই’ প্রকল্পের সহযোগিতায় সংসদ টেলিভিশনে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান কার্যক্রম চলছে।
একই ভাবে যশোর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সিটি ক্যাবলের মাধ্যমেও প্রতিদিন সন্ধায় অষ্টম ও দশম শ্রেণির পাঠদান কার্যক্রম চলছে।
এদিকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় হাইস্কুলের শিক্ষকরা প্রাইভেট টিউশনি শুরু করেছে। সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করে তারা প্রাইভেট টিউশনি শুরু করাই অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছে। এ ব্যাপারে অভিভাবকরা প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।