শাহাদাত হোসেন: সাতক্ষীরার দেবহাটাতে রপ্তানীযোগ্য চিংড়ীতে অপদ্রব্য পুশ করার ঘটনায় মোবাইল কোর্টের অভিযান পরিচালনা করে পুশকৃত ৬ ক্যারেট বাগদা চিংড়ী জব্দের পর মাটিতে পুতে বিনষ্ট এবং অপদ্রব্য পুশ করায় নিয়োজিত দুই নারী শ্রমিককে আটক করেছেন দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজিয়া আফরীন।
গত কাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজিয়া আফরীন পারুলিয়া ব্রীজের পাশে মৎস্য সেডের আওতাধীন মাছ ব্যবসায়ী এবং রপ্তানীযোগ্য চিংড়ী সরবরাহকারী ও কমিশন এজেন্ট আবু সাঈদের মেসার্স রিচি ফিস নামক প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে অপদ্রব্য পুশ করা অবস্থায় ছয়টি ক্যারেটে প্রায় দুই শত কেজি বাগদা চিংড়ী জব্দ ও পুশ কাজে নিয়োজিত পারুলিয়ার ইমাদুল ইসলামের স্বামী পরিত্যাক্তা মেয়ে সালমা খাতুন (৪০) এবং একই এলাকার মৃত আজিবর আলীর স্বামী পরিত্যাক্তা মেয়ে মাজিদা খাতুন (৪২) কে আটক করেন। পরে জব্দকৃত বাগদা চিংড়ীগুলো উপজেলায় নিয়ে জনসম্মুখে মাটিতে পুতে বিনষ্ট এবং মুলহোতা আবু সাঈদকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করে আটক দুই নারী শ্রমিককে ছেড়ে দেয়া হয়।
পারুলিয়া মৎস্য সেডের অন্যান্য ব্যবসায়ীরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, পারুলিয়া মৎস্য সেডে রপ্তানীযোগ্য চিংড়ীতে অপদ্রব্য পুশ না করার বিষয়ে বিধি নিষেধ আরোপ থাকলেও, সেসব বিধি নিষেধের তোয়াক্কা না করে বরং প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ নারী শ্রমিকদের দিয়ে বাগদা চিংড়ীতে অপদ্রব্য পুশ করে আসছিলো মেসার্স রিচি ফিসের মালিক আবু সাঈদ। অভিযানের ঠিক আগমুহুর্তেও আবু সাঈদের ওই মৎস্য প্রতিষ্ঠানটির অভ্যন্তরে দরজা লাগিয়ে নারী শ্রমিকরা ইঞ্জেশনের সিরিঞ্জ ব্যবহার করে জেলী, সাবু, ও চিড়া ভিজানো সহ বিভিন্ন অপদ্রব্য রপ্তানীযোগ্য বাগদা চিংড়ীর শরীরে পুশ করছিলো। অভিযানকালে নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতি টের পেয়ে নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে কৌশলে সটকে পড়ে আবু সাঈদ। তাকে না পেয়ে অপদ্রব্য পুশের কাজে নিয়োজিত দুই নারী শ্রমিককে আটক এবং পুশকৃত ছয়টি ক্যারেটে প্রায় দুই শত কেজি রপ্তানীযোগ্য বাগদা চিংড়ী জব্দ করা হয়। একইসাথে অভিযানকালে অপদ্রব্য পুশের ঘটনার মুলহোতা আবু সাঈদকে স্বল্প সময়ের মধ্যে উপজেলাতে হাজির হওয়ার জন্যও নির্দেশনা দেয়া হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাজিয়া আফরীন বলেন, এসকল অসাধূ ব্যবসায়ীরা কেবলমাত্র নিজেদের স্বার্থ হাসিল ও ওজন বৃদ্ধির জন্য বিদেশে রপ্তানীযোগ্য বাগদা চিংড়ীতে অপদ্রব্য পুশ করে আসছে। যেকারনে ক্রমশ বিদেশে বাংলাদেশের রপ্তানীকৃত বাগদা চিংড়ীর সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে এবং বিদেশ থেকে চিংড়ী মাছ ফেরত আসছে। মঙ্গলবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পারুলিয়া মৎস্য সেডের ওই প্রতিষ্ঠানটিতে মোবাইল কোর্টের অভিযান পরিচালনা করা হয়। পরে রপ্তানীযোগ্য বাগদা চিংড়ীতে অপদ্রব্য পুশের অপরাধে ওই প্রতিষ্ঠানটির মালিক আবু সাঈদকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করে আটক দুই নারী শ্রমিককে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।