শার্শা প্রতিনিধি : যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বাঁকড়া ইউনিয়নের একটি গ্রামীন ইটের রাস্তা
নির্মাণ কাজে বাঁধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক মহিলার বিরুদ্ধে।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ছোট খলসী গ্রামে। এতে করে ঐ গ্রামের ২৫/৩০ টি পরিবারের চলাচলের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এলাকাবাসী মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
ঘটনাস্থলে সরেজমিনে পরিদর্শন করে জানা যায়, ঝিকরগাছা উপজেলার ছোট খলসী গ্রামের উত্তরপাড়ার একটি রাস্তা দিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে চলাচল করে আসছে ওই এলাকার ২৫/৩০ টি পরিবার।
সম্প্রতি এঅঞ্চলের মানুষের সুবিধার্থে সরকার ওই রাস্তা বাঁকড়া ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে এডিপি প্রকল্পের আওতায় ইটের হিয়ারিং করার কাজ শুরু করে।
আর একাজে ওই রাস্তার মধ্যে নিজের জমি আছে বলে বাঁধা সৃষ্টি করছে একই গ্রামের মৃত আলিম উদ্দীনের স্ত্রী আকলিমা বেগম নামে এক মহিলা। তার এহেন কাজে ইন্ধন দিচ্ছে ওই গ্রামের শওকত মোড়লের ছেলে শাহাদত, শ্যাম গাজীর ছেলে হুদা গাজী ও আকলিমা বেগমের মেয়ে জামায়ের ভাই মাটিকুমরা গ্রামের লিটন ও ভোলা গাজীর ছেলে তুহিন।
তদন্তকালে আরো জানা যায়, উপজেলার ছোট খলসী গ্রামের মৃত আহম্মদের ছেলে অইজদ্দিনের কাছ থেকে কয়েক বছর পূর্বে আকলিমার স্বামী আলিম উদ্দীন বাস্ত ভিটা ও ধানী জমি রদবদল করে।
এসময় অইজদ্দিন বাস্ত ভিটা থেকে ১৩ শতক জমি আলিম উদ্দীনকে দিয়ে মাঠ থেকে ধানী জমি সাড়ে ১৮ শতক গ্রহন করে। পরে রেকর্ড করার সময় আলিম ও অইজদ্দিন একত্রিত হয়ে বাস্ত ভিটা থেকে ১৩ শতকের পরিবর্তে ১২ শতক আলিমের নামে ও সাড়ে ১৮ শতকের পরিবর্তে ১৭ শতক জমি অইজদ্দিনের নামে এয়াজ বদল করেন।
এয়াজ বদল করার ফলে ওই রাস্তা অইজদ্দিনের জমির উপর দিয়ে হলেও আকলিমা তার স্বামীর জমি আছে দাবী করে এলাকার কয়েক জন্য দূর্বৃত্তর ইন্ধনে সরকারী বরাদ্দকৃত রাস্তার কাজে বাঁধা দিয়ে ২৫/৩০ ঘর মানুষের চলাচলের পথ বন্ধ করেছে।
এবিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে একই গ্রামের সাবেক জমির মালিক সরোয়ার হোসেন ও রেজাউল ইসলাম জানান, আকলিমা বেগম নামের ঐ মহিলা যে জমির ভোগদখল করে আসছে এবং যে রাস্তা বন্ধ করে নিজের বলে দাবী করছে তা মেটেও তার নয়।
অহেতুক তিনি জোর জবরদস্তি করে রাস্তার ঐ জায়গা দখলে নিয়ে গ্রামের শত শত মানুষের চলাচলের পথে বাঁধার সৃষ্টি করেছেন।
এ ঘটনার আরো তথ্য অনুসন্ধানের জন্য অভিযুক্ত আকলিমা বেগমের বাড়িতে গেলে মিডিয়ার উপস্থিতি টের পেয়ে কৌশলে গা ঢাকা দেন তিনি। বাড়িতে থাকা আকলিমা বেগমের শিশু সন্তানেরা জানায় তাদের মায়ের বাড়িতে না থাকার কারন।
এব্যাপারে বাঁকড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নিছার আলী বলেন, গ্রামীন রাস্তার অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য সরকারি ভাবে এডিপি প্রকল্পের আওতায় ইটের হিয়ারিং করার কাজ শুরু করি।
রাস্তাটির কাজ এক তৃতীয়াংশ সম্পন্ন হয়ে গেছে। আকলিমা বেগমের বাড়ির কোল ঘেষে ইটের হিয়ারিং পড়তেই তিনি রাস্তার ঐ জায়গা নিজের বলে দাবী করেন এবং সরকারি কাজের বাঁধার সৃষ্টি করে কাজ বন্ধ করে দেন।
পাশাপাশি টিনের প্রাচির এবং খড় ও টিনের ঝাপড়ি তুলে গ্রামের মানুষের চলাচলের রাস্তাটি বন্ধ করে দেন।
বিসয়টির সঠিক তদন্ত ও সমাধানের জন্য এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে নাভারণ এএসপি সার্কেল সহকারী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে একটি অভিযোগ করা হয়েছে। বিষয়টি যাহাতে দ্রুত তদন্ত ও সঠিক সমাধানে পৌছায় এমনটি কামনা করছি।
এ বিষয়ে ঝিকরগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সরকারি রাস্তা তৈরিতে বাঁধা দেওয়ার বিষয়টি শুনে উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনও মহোদয় এবং আমি নিজে সরেজমিনে ঘটনাস্থলে যায়।
রাস্তাটি যাহাতে তৈরীতে কোন বাঁধার সৃষ্টি না হয় সে জন্য অভিযুক্ত মহিলাকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। ইউএনও মহোদয় এবং উপজেলা চেয়ারম্যানের দেওয়া নির্দেশনা অমান্য করলে বা রাস্তা তৈরিতে পরবর্তীতে বাঁধার সৃষ্টি করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।