কেশবপুরে হরিহর নদের পানিতে নিম্নাঞ্চল নিমজ্জিত
আজিজুর রহমান, কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি: কেশবপুরে হরিহর নদের উপচে পড়া পানিতে পৌরসভার নিম্নাঞ্চল নিমজ্জিত হয়েছে। হরিহর নদে বাঁধ দিয়ে খনন কাজ করায় পানিপ্রবাহে বাধাগ্রস্ত হয়ে তীরবর্তী এলাকায় উঠে আসছে।
পৌরসভার ১, ৫ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের অনেকের বাড়ির ভেতর পানি ঢুকে পড়ায় বিপাকে পড়েছে মানুষজন। মধ্যকুল খানপাড়া ও ফিলিং স্টেশনের পাশের সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় পানির ভেতর দিয়েই যাতায়াত করতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে।পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড মধ্যকুলের খানপাড়া বিউটি বেগম বাড়িতে ঢুকে পড়া পানির ভেতর দিয়ে সাংসারিক কাজকর্ম করছেন।
বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই আমাদের এ অবস্থায় পড়তে হয়েছে। পুরো বর্ষাকালে বাড়ি ছাড়ার উপক্রম হবে। মধ্যকুল নাথপাড়া এলাকার নিচু অঞ্চলে পানি ঢুকে পড়েছে। সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর আয়ূব খান বলেন, তাদের বাড়ির যাতায়াতের রাস্তাটিও পানিতে তলিয়ে গেছে। এলাকার একাধিক বাড়িতে নদের পানি উঠে এসেছে। পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কেশবপুর সরদারপাড়া ও খানপাড়ায় পানি ঢুকে পড়েছে।মাস্টার ইমতিয়াজ উদ্দীন জানান, সাহাপাড়া-ভবানীপুর যাতায়াতের পিচে পানি উঠেছে।
১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ব্যবসায়ী মনোরঞ্জন দে মনু জানান, আমাদের বাড়িসহ অনেকের বাড়িতে পানি উঠেছে। পানি নিষ্কাশনের পথ না থাকায় পানির ভিতর দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে অনেক পরিবারকে। পানি নিষ্কাশনের জন্য একটা ড্রেন প্রয়োজন বলে তিনি দাবি করেন।
কেশবপুর পৌরমেয়র রফিকুল ইসলাম বলেন, তার এলাকার কয়েকটি জায়গায় পানি উঠেছে। দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মুন্সী আছাদুল্লাহ বলেন, হরিহর নদের বিভিন্ন স্থানে বাঁধ দিয়ে খননের কাজ চলছে। যেকারণে নদের ও বৃষ্টির পানি এক হয়ে নদ তীরবর্তী কিছু এলাকায় পানি উঠে এসেছে।
২.
কেশবপুরে ভাসমান বেডে সবজি চাষ একদল বেকার যুবককের ভাগ্য বদল
কেশবপুরে হরিহর নদীর উপর ভাসমান বেডে সবজি চাষ করে একদল বেকার যুবকদের ভাগ্যবদল হয়েছে। তারা এখন অনেকেই স্বাবলম্বী। যাদের বসতভিটা ছাড়া জমি নেই এমন যুবকেরা ওই নদীর শেওলা দিয়ে ধাপ তৈরী করে তার ওপর বিভিন্ন ধরনের সবজি আবাদ করেছেন। এতে তাদের সংসারের প্রয়োজন মিটিয়েও অতিরিক্ত সবজি বাজারে বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন। জানা গেছে, হরিহর নদীতে নাব্য না থাকায় শেওলায় পরিপূর্ণ হয়ে রয়েছে। ওই নদীর তীরবর্তী মধ্যকুল রাজবংশী পাড়ার জেলেরা নদীতে মাছ শিকার করতে ব্যর্থ হয়ে বেকার হয়ে পড়ে। এ সময় ওই নদীর শেওলাকে কাজে লাগিয়ে সবজি উৎপাদনের লক্ষ্যে উপজেলা কৃষি বিভাগ একটি প্রকল্প গ্রহণ করে।
গত মার্চ মাসে কৃষি বিভাগ ভাসমান বেডে সবজি চাষের ওপর মধ্যকুল ব্লকের রাজবংশী পাড়ার ২২/২৪ জন কৃষক- কৃষাণিকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে। উপজেলা কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়ছে।মধ্যকুল ব্লকের দায়ত্বিরত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা অনাথ বন্ধু দাস জানান, প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত কৃষকরা নদীর শেওলা প্রথমে ¯‘প করে রাখেন। শেওলা পচে ধাপ তৈরী হলে তার ওপর দেয়া হয় ভার্মি কম্পোস্ট। এরপর সবজির বীজ বপণ করা হয়। প্রতিজন কৃষক ৩/৪টি বেড তৈরী করে তার ওপর সবজি চাষ করেছেন।
রাজবংশী পাড়ার গোরাচাঁদ সরকার জানান, তিনি ওই নদীতে ৫টি ভাসমান বেড করেছেন। তাতে লাল শাক, সবুজ শাক, গীমা কলমী, পুইশাক, ডাটা শাক এবং ভাসমান বেডের ওপর মাচা (বান) করে লাউ ও চাল কুমড়ার চাষ করেছেন। কোন প্রকার কীটনাশক প্রয়োগ ছাড়াই তিনি বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন করছেন। এতে তিনি সংসারের প্রয়োজন মিটিয়ে অতিরিক্ত সবজি বাজারে বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়ছেন। তার দেখে ওই পাড়ার আরো ২০/২৫ জন কৃষক এ পদ্ধতিতে সবজি উৎপাদন শুরু করেছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মহাদেব চন্দ্র সানা বলেন, যাদের কৃষি জমি নেই তারা এই পদ্ধতিতে সবজি আবাদ করলে লাভবান হবেন। উপজেলা কৃষি বিভাগ ভাসমান বেডে সবজি ও মশলা চাষ গবেষণা, সম্প্রসারণ ও জনপ্রিয়করণ শীর্ষক একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে।
৩.
কেশবপুরে ২ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার ও তাদের কাছ থেকে ইয়াবা উদ্ধার
কেশবপুর থানা পুলিশের অভিযানে ইয়াবাসহ দুই মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে। তাদের নামে কেশবপুর থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে।
থানা সূত্রে জানা গেছে, থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জসীম উদ্দীনের নির্দ্দেশে উপ-পরিদর্শক নাসিরুল হক খাঁন সঙ্গীয় পুলিশ ফোর্স নিয়ে বুধবার রাতে উপজেলার বাউশলা গ্রামে মৃত তাইজুল ইসলামের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মাদক ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাক ওরফে টাওয়ার রাজ্জাকের (৩৫) ও একই গ্রামের রুহুল আমিনকে (৩০) গ্রেফতার করে।
এসময় ঘরের ভেতর তল্লাশি চালিয়ে ৩০ পিচ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। মাদক ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাক ওরফে টাওয়ার রাজ্জাকের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। সে এলাকায় চিহ্নিত একজন মাদক ব্যবসায়ী।এ ব্যাপারে কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জসীম উদ্দীন জানান, গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার তাদেরকে যশোর আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
৪.
কেশবপুরে লাল ফিতা দিয়ে এলাকা লকডাউন
কেশবপুরে লাল ফিতা দিয়ে রেড জোন এলাকা চিহিৃত করে লকডাউন করা হয়েছে।
কেশবপুর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ইরুফা সুলতানা নেতৃত্বে শুক্রবার লাল ফিতা দ্বারা রেড রোজ এলাকা সমূহ চিহিৃত করা হয়েছে। কেশবপুর পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের উপজেলা ভূমি অফিস থেকে কালী মন্দির হয়ে অনন্ত সড়ক দিয়ে সাহাপাড়া।
সাব রেজিষ্ট্রি অফিস হয়ে মন্টু সাহেবের বাড়ি পর্যন্ত, অনন্তসড়ক ,সোনাপট্টি, গমপট্টি, পাঁজিয়া সড়কের পুরাতন ব্রীজ, মেহের মার্কেট, পিনুর মোড় হতে নোনা মেটেলের মসজিদ পর্যন্ত,পুরাতন পাম্পের পিছন হতে সুইসগেট পর্যন্ত, খ্রীষ্টান মিশন হতে ডাকনাম ভবানীপুর পর্যন্ত, হেলথ কেয়ার এর পরের বাড়ি হতে উত্তর দিক রবিউলের বাড়ি পর্যন্ত লাল ফিতা দ্বারা রেড জোন হিসাবে চিহিৃত করা হয়েছে।