যবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ নোভেল করোনাভাইরাসের (কভিড-১৯) প্রভাবে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে প্রতিদিনই আক্রান্ত হচ্ছে অসংখ্য মানুষ। আক্রান্তদের অনেকেই সঠিক চিকিৎসা নিয়ে ফিরছেন সুস্থ হয়ে আবার অনেকেই করোনাযুদ্ধে হেরে গিয়ে পাড়ি জমাচ্ছেন পরপারে।
করোনাযুদ্ধে সপরিবারে জয়ী বাড়িতে ফিরেছেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসায়েন্স বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী হুমাইয়ারা বিনতে কবির মুনিয়া ও তার পরিবার।
কিন্তু মহামারি করোনার কাছে হেরে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন মুনিয়ার বাবা স্কুলশিক্ষক মো. হুমায়ুন কবির (৫১)। মুনিয়ার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা জেলার মেঘনা থানার মানিকারচর ইউনিয়নের জয়পুর গ্রামে। বাবা-মায়ের চাকরির সুবাদে পুরো পরিবার ঢাকাতেই থাকেন।
শিক্ষার্থী হুমাইয়ারা বিনতে কবির মুনিয়া জানান, ‘হঠাৎ করেই বাবার প্রচণ্ড সর্দি-কাশি ও জ্বর শুরু হওয়ার পর গত ২৬ মে মঙ্গলবার করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দেই এবং ফলাফল গত ২৮ মে বৃহস্পতিবার প্রদান করা হয়। এতে মায়ের নেগেটিভ আর বাবা, ছোট বোন ও আমার ফলাফল করোনা পজিটিভ আসে। তারপর ওইদিন সকাল থেকে বাবার প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট শুরু হয়, বিকালে অবস্থা আরো খারাপ হলে আমরা তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই এবং রাত সাড়ে ১১টায় বাবা ইন্তেকাল করেন। তবে খারাপ লাগার মতো বিষয় এটা যে, বাবাকে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করানো হলে তৎক্ষণাৎ সেখানে আমরা কোনো চিকিৎসা সেবা পাইনি’।
নিজের পরিবারের বাকি সদস্যদের করোনা আক্রান্তের বিষয়ে শিক্ষার্থী মুনিয়া বলেন, বাবার করোনার উপসর্গ ছিল কিন্তু মা, ছোট বোন ও আমার মধ্যে কোনো উপসর্গ দেখা দেয়নি। বাবার মৃত্যুর পর দিন আমরা সপরিবারে চিকিৎসা নিতে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি হই আর সেদিনের নমুনা পরীক্ষায় আমার মায়েরও করোনা পজিটিভ আসে। হাসপাতালে কয়েকদিন চিকিৎসা নেওয়ার পর গত ৫ জুন আমাদের আবার নমুনা পরীক্ষা করা হয় তাতে আমাদের পরিবারের সকলের ফলাফল নেগেটিভ আসে’।
তিনি আরো জানান, করোনা পজিটিভ আসার পর থেকে পরিবার, সহপাঠী, বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সকলের নিকট থেকে মানসিকভাবে অনেক সাপোর্ট পেয়েছি, সকলেই সবসময় অনেক খোঁজ-খবর নিয়েছেন। করোনার এ সংকটময় মুহূর্তে সকলকে নিরাপদ থাকারও পরামর্শ দেন শিক্ষার্থী মুনিয়া।