এম. হাসান রিয়াদ (হাবিপ্রবি): উত্তরবঙ্গের মাটিতে স্বগর্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা প্রায় ১২০০০ শিক্ষার্থীর পরিচয়দাতা ৮৫ একরের ক্যাম্পাস হাজী মোহাম্মাদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। করোনা সংক্রমণ এড়াতে গত ১৬ মার্চ থেকে সাধারন ছুটি ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। দুদিনের ভিতরেই জনশূণ্য হয়ে পড়ে হাবিপ্রবি।
অথচ, প্রতিদিন সকাল হওয়ার সাথে সাথেই শিক্ষার্থীদের পদচারণ মুখরিত হয়ে উঠত ছোট্ট এই ক্যাম্পাস তারপর দিনভর চলত ব্যস্ততা। সারাদিনের ক্লান্তিতে সূর্য অস্ত গেলেও থামেনি কখনো গল্পের পসরা সাজিয়ে বসা বন্ধুত্বের আড্ডা। রাতের ক্যাম্পাস যেন আরও মুখর, ঘুম না আসা দূপুর রাতে চায়ের কাপে প্রতিটা চুমুকেই মিশে থাকত গল্প-জয় পরাজয়ের গল্প, নিম্নবিত্ত পরিবারের ছেলেটার জীবন সংগ্রামে হেরে গিয়েও হার না মানার গল্প, স্নাতকোত্তর ছেলের বেকারত্ব আর হতাশার গল্প, বিপ্লবের গল্প।
রাত বাড়ার সাথে সাথে বিভিন্ন জায়গায় বসত গানের আসর- কখনো ব্যান্ড কখনো লালনগীতি আবার কখনো অপছন্দের গান বিকৃত করেও গেয়ে চলত অনেকে। মাঝে মাঝে দু’তিন জনকে মাঝরাত্তিরেও বেসুরো গলায় ইচ্ছেমতো গলা মিলিয়ে চলতে দেখা যেত।
কোভিড-১৯ এর করাল গ্রাসে সমগ্র জনজীবন যখন হুমকির মুখে হাবিপ্রবি তখন জনশূণ্য হয়ে তার আপন রূপে নিজেকে আরও মোহনীয় করে সাজিয়ে তুলেছে। বিরামহীন হেঁটে চলা ধূলোর সে পথ এখন সাদা ফুলের সবুজ ঘাসে ঢাকা। ক্যাম্পাসের প্রাণকেন্দ্র খেতাব পাওয়া লিচুবাগানে আজ কোন জনকোলাহল নেই সত্যি কিন্তু পাখির কলকাকলিতে মুগ্ধতা আসবে নিশ্চিত, তার সঙ্গে প্রাণ জুড়ানো শীতল বাতাস। ফুলে ফুলে সেজেছে লাইব্রেরী চত্ত্বর আর বোটানিকাল গার্ডেন।
করোনার কারণে লকডাউনে দূষণমুক্ত পৃথিবী তার আপন রূপে ফিরছে আর সেখানে পিছিয়ে নেই হাবিপ্রবি ক্যাম্পাসও।