ঝিকরগাছা(যশোর)প্রতিনিধি
যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কামরুজ্জামান মোঃ জাহাঙ্গীর হুসাইন মিঞার ঘুষ বাণিজ্য তুঙ্গে শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর তার থলের কালো বিড়াল বেরোতে শুরু করেছে। প্রথমে তার বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্য এবার যশোর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তারের স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগ উঠা ফাইল ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে স্কুলের প্যাডের উপর অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বলরামপুর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (বাংলা) মোছাঃ লায়লা পারভীন। ২০২০সালে যশোর সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে তিনি দায়িত্বে থাকাকালীন সময়েও তার বিরুদ্ধে অবৈধভাবে শিক্ষক নিয়োগের অভিযোগ উঠে। সদর উপজেলার বলরামপুর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কয়েকজন শিক্ষক জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে নিয়োগের ব্যবস্থা করেছেন। আর এ থেকে কয়েক লাখ টাকা অর্থ বাণিজ্য করার অভিযোগ উঠে। বিদ্যালয়ের সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে ম্যানেজ করে তিনি এই জাল-জালিয়াতিতে সামিল হয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, অর্থের বিনিময়ে এই নিয়োগ বাণিজ্য জায়েজ করার চেষ্টা এখনো চালাচ্ছেন তিনি। ভুক্তভোগি প্রতারিত শিক্ষকরা প্রতিকার চেয়ে জেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে তখন লিখিত অভিযোগও দিয়েছিলেন। ঝিকরগাছা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কামরুজ্জামান মোঃ জাহাঙ্গীর হুসাইন মিঞার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এ মামলা চলমান থাকার পরেও জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার আস্থাভাজন হওয়ার সুবাদে ঝিকরগাছাসহ অতিরিক্ত যশোর সদর, চৌগাছা এবং শার্শা উপজেলার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। আর্শীবাদ স্বরূপ একাই ৪ উপজেলার দায়িত্ব গ্রহণ করেই ঝিকরগাছায় তপন কুমার মন্ডল, শার্শায় বাচ্চু, সদরে মুজিবর ও চৌগাছায় বিশারতকে ক্যাশিয়ার হিসেবে নিযুক্ত করেন। আগামী ৮ মার্চ ২০২৫ তারিখ অবসর (পিআরএল) গ্রহণ করবেন। তবে উল্লেখিত তারিখ শনিবার সরকারি ছুটি থাকায় তার শেষ কর্ম দিবস হচ্ছে চলতি সপ্তাহের ৬ মার্চ বৃহস্পতিবার। অবসরে যাওয়ার আগেই ভবিষ্যৎ গুছিয়ে নিতে মহাব্যস্ত হয়ে পড়েছেন তিনি। তিনি তার আখের গোছাতে এমন কোন অন্যায় নেই যে তাতে মাথা দিচ্ছে না বলে অনেক শিক্ষক সূত্রে থেকে জানা যাচ্ছে। সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বলরামপুর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্যাডে সম্প্রতি ২৭ ফেব্রয়ারী, বআমারি- ১২৯/২০২৫ নং স্মারকে বিদ্যালয়ের ইএমআইএস সেলের পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করে ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয়ের স্বাক্ষর জ্ঞান করে এমপিও আবেদন প্রেরণের বিষয়ে আবেদন দাখিল করেছেন সহকারী শিক্ষক (বাংলা) মোছাঃ লায়লা পারভীন। দায়েরকৃত অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেছেন, আমার অত্র বিদ্যালয়ের ইএমআইএস সেলের পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করে মোঃ ওলিউল্লাহ, প্রধান শিক্ষক পদে ও মোঃ মুরাদ হোসেন নিরাপত্তা কর্মী পদে, অবৈধ ভাবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয়ের স্বাক্ষর জালিয়াত করে এমপিও এর জন্য আবেদন প্রেরন করেন। বিষয়টি আমি বিগত ২০/০২/২০২০ ইং তারিখে বিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মচারীদের জানুয়ারী মাসের ইএফটি তে বেতন বিল প্রেরণ করিবার জন্য বিদ্যালয়ের ইএমআইএস সেলের পাসওয়ার্ড নিয়ে আইডিতে প্রবেশ করিতে গেলে প্রাথমিক ভাবে ব্যর্থ হই তাৎক্ষনিক ভাবে ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড ফরগেট পাসওয়ার্ড এর পরিবর্তন এর মাধ্যমে নতুন ভাবে ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড পুনরুদ্ধার করিতে সক্ষম হইয়া বিদ্যালয়ের ইএমআইএস গেলে প্রবেশ করে বিষয়টি জানিতে পারিলাম। কি ভাবে আমি ” যশোর সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এম কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীর সাহেবের কাছে বিষয়টি জানিতে চাহিলে তিনি আমাকে বলেন যে সকল কাগজ বাহাই করিয়া সঠিক হওয়ায় আমি জেলা শিক্ষা অফিসে প্রেরন করিয়াছি। বিষয়টি আমার কাছে সন্তোষ জনক না হওয়ায় পরবর্তীতে গত ২৬/০২/২০২৫ইং তারিখে এলাকার একজন গন্যমান্য ব্যক্তি প্রকৌশলী মোঃ গোলাম রসুল সাহেবরে সত্যতা জানার জন্য আপনার নিকট প্রেরণ করি এবং বিষয়টি আপনি নিজেও তাৎক্ষনিক ভাবে অবগত হন। বিষয়টি দ্রুত সমাধানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করেছেন। প্রধান শিক্ষক পদের মোঃ ওলিউল্লাহ বলেন, তিনি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে রয়েছেন। বেতন করার জন্য ইউএনও’র স্বাক্ষর জালিয়াতির বিষয়ে তিনি বলেন, ওটা ভুয়া কথা। ইউএনও অফিসে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ হয়েছে এটার বিষয়ে তিনি বলেন আমি শুনেছি। ঝিকরগাছা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কামরুজ্জামান মোঃ জাহাঙ্গীর হুসাইন মিঞা বলেন, জালিয়াতির বিষয়টি আমার কানে এসেছে। আমি সেটি স্টাফ করে দিয়েছি।
সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তার বলেন, এটার বিষয়ে আমার কানে এসেছে। আমি এটার বিষয়ে রবিবার দিন দেখবো।