জাহিদ হাসান
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক ওয়াটার ট্রীটমেন্ট প্লান্ট,ওভারহেড ট্যাংক নির্মাণ,পৌর এলাকার ২৪ কিলোমিটার নতুন পাইপ লাইন সম্প্রসারণ ও পানির মিটার স্থাপন কাজে অনিয়ম-দূর্নীতির অভিযোগ মিলেছে।পৌর এলাকার ৪নং,২নং,৩নং,৭ নং ও ৫নং ওয়ার্ডবাসীর অভিযোগ চলমান প্রকল্পের কাজে নিন্মমানের পাইপ ও নির্মাণ সরাঞ্জামাদি ব্যবহার,নতুন ও পুরাতন পাইপের মিশ্রনে পানির মেইন লাইন টানা,পানির নতুন সংযোগ প্রদানে দলীয়করন,পানির সংযোগ লাইন সরবারহে পৌরকর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রচার না করা এবং সংযোগ পেতে অবৈধ্য ভাবে অর্থ আদায় করা।পৌরবাসীর এমন অভিযোগের সদউত্তর দিতে পারছেনা পৌর কর্তৃপক্ষ, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এমনকি জনস্বাস্থ্য অধিদপÍরের শার্শা অফিসের দায়িত্বরতরা। একে অপরকে দোষারপ করলেও এখনো হদিস মেলেনী পাইন লাইনের সংযোগ প্রত্যাশীদের কাছ হতে উত্তোলিত অর্থের ঠিকানা। তবে কি এই অর্থ লোপাট?এ কান্ডে কারা জড়িত এমন প্রশ্ন এখন জনমনে। বেনাপোল পৌরবাসীর সুপেয় পানি সরবারহের উদ্দেশ্যে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সার্বিক তত্তাবাধনে ২২ কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মাণাধীণ ওয়াটার ট্রীটমেন্ট প্লান্ট প্রকল্প কাজের সিডিউল মোতাবেক পৌর এলাকার বাসীন্দারা বিনামূল্যে পানির সংযোগ পাওয়ার কথা থাকলেও ইতিমধ্যে সংযোগপ্রাপ্ত গ্রাহকদের কাছ হতে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে ৩শ হতে ৪ হাজারের অধিক টাকা,সাথে নেওয়া হয়েছে এন আইডি কার্ডের ফটোকপি। এমনকি পানির লাইনের সংযোগ দেওয়ায় স্বেচ্ছাচারিতা ও স্বজনপ্রিতীর দোষে দুষ্ট পৌরপ্রশাসন। অভিযোগ বিষয়ে জানতে বেনাপোল পৌরসভার পানিশাখার দায়িত্বরত ওসমান,জাহিদ ও মফিজের সাথে কথা বললে সংযোগ পাওয়া গ্রাহকের কাছ হতে টাকা নেওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে তারা জানান,ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি মহসিন,জনস্বাস্থ্য অফিসের মান্নান ও সাবেক মেয়র নাসিরের প্রতিনিধি জামাল সংযোগ প্রাপ্তদের কাছ হতে টাকা উত্তোলন করেছে। নতুন পানির লাইনের সংযোগ কতজন গ্রাহক পেয়েছেন প্রশ্নে তারা জানান,এ পর্যন্ত ১ হাজারের অধিক গ্রাহককে সংযোগ দেওয়া হয়েছে। পৌরবাসীর অভিযোগ সত্য বলে বেনাপোল পৌরসভার ৫নং(দিঘীরপাড় )ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সলির আজিম উদ্দীন গাজি জানান,নতুন পানির লাইন সংযোগ প্রদান ও টাকা উত্তোলন বিষয়ে তৎকালীন পৌর পরিষদে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। কাউন্সিলরা গ্রাহকদের কোন তালিকা দেননী। প্রায় ৫/৬হাজার বাড়ী হতে জামাল নামের ব্যাক্তি ৩শ হতে ৫শ টাকা করে গ্রহণ করার কথা শুনা মাত্রই আমি বিষয়টি নিয়ে পরিষদ সভায় প্রতিবাদ জানিয়েছি।অভিযুক্ত জামালের মুঠোফোনে কল করলে সংযোগ না মেলায় বক্তব্য জানা যাইনী। অভিযোগ বিষয়ে প্রকল্পের কাজে নিয়োজিত শামিম এন্ড সুমন ইঞ্জিনিয়ার ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মালিক রনির সাথে মুঠো ফোনে কথা বললে তিনি জানান,ঐ দুই নামে বেনাপোল পৌর এলাকায় আমার কোন প্রতিনিধি নাই। পানির লাইনের সংযোগ দিতে টাকা নেওয়ার কোন সুযোগ নেই বিষয়টি এখনি আমি পৌরসভার প্রকৌশলীকে অবহিত করছি। অভিযোগ বিষয়ে জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের শার্শা অফিসের উপসহকারী প্রকৌশলী মোঃ নুর ইসলাম জানান, গ্রাহকদের কাছ হতে টাকা উত্তলোনের অভিযোগ শুনেছি। পৌরকর্তৃপক্ষের সহিত কথা বলেছি তারা জানিয়েছে টাকা ও এন আইডি কার্ডের কপি পৌরসভায় জমা আছে। বিষয়টি নিশ্চিতে বেনাপোল পৌরসভার সচিব সাইফুল ইসলামের সহিত মুঠো ফোনে কথা বললে তিনি জানান,এ সংক্রান্তে কোন কাগজাদী বা অর্থ পৌরসভার তহবিলে জমা নাই। এমনকি পানির লাইনের সংযোগ বাবদ গ্রাহক হতে অর্থ আদায়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ সম্পর্কে তিনি জ্ঞাত নন। বিষয়টি নিয়ে সাবেক মেয়রের মুঠোফোনে কথা বললে তিনি জানান,পানির লাইনে কাজ করা লেবারদের চা নাস্তা বাবদ ও নিজের তদারকির পারিশ্রমিক বাবদ গ্রাহকদের নিকট হতে ২/১শো টাকা জামাল তুলতে পারে। তবে আমার জানা মতে বড় অঙ্কের কোন টাকা সে গ্রাহকের কাছ হতে নেইনি। উল্লেখ্য ২০২২ সাল হতে বেনাপোল পৌরসভার ২৪ কিলোমিটার এলাকায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক ওয়াটার ট্রীটমেন্ট প্লান্ট,ওভারহেড ট্যাংক নির্মাণকাজ শুরু হয় যা এখনো চলমান রয়েছে। ২০২৪ সালে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।এরপর জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর এটি বেনাপোল পৌরকর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর করবে।