তাজাম্মূল হুসাইন

উৎকণ্ঠা আর উৎসাহের মধ্য দিয়ে শেষ হলো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ শারদীয় দুর্গোৎসবের আয়োজন। রোববার (১৩ অক্টোবর) প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় শারদীয় দুর্গোৎসবের সকল আয়োজন। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, মানুষের মনের আসুরিক প্রবৃত্তি, কাম, ক্রোধ, হিংসা, লালসা বিসর্জন দেওয়াই মূলত বিজয়া দশমীর মূল তাৎপর্য। এ প্রবৃত্তিগুলোকে বিসর্জন দিয়ে একে অন্যের সঙ্গে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করাই এ আয়োজনের উদ্দেশ্য। চন্ডীপাঠ, বোধন ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে ষষ্ঠী তিথিতে ‘আনন্দময়ীর’ আগমনে গত ৯ অক্টোবর থেকে দুর্গোৎসবের সূচনা হয়। পরবর্তী ৫ দিন দেশব্যাপীসহ মণিরামপুরে পূজামণ্ডপগুলোতে পূজামণ্ডপঅর্চনার মধ্যদিয়ে ভক্তরা দেবী দুর্গার প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন। দশমী তিথিতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে উৎসবের শেষ হয়। এ বছর দেবী দুর্গার আগমন হয় দোলায় বা পালকিতে। দেবীর এই আগমনের ফলাফল হবে মড়ক। যা শুভ ইঙ্গিত নয়। এছাড়াও দেবী স্বর্গে গমন করবেন ঘোটকে বা ঘোড়ায়। শাস্ত্র মতে দেবীর গমন বা আগমন ঘোটকে হলে ফলাফল ছত্রভঙ্গ হয়। সনাতন ধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী, বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দেবী ফিরে গেলেন স্বর্গলোকের কৈলাসে স্বামীর ঘরে। পরের বছর শরতে আবার তিনি আসবেন এই ধরণীতে যা তার বাবার গৃহ। প্রতিমা বিসর্জনের জন্য সব ধরণের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বিদায়ের করুণ ছোঁয়ায় সারিবদ্ধভাবে একে একে নদীতে দেওয়া হয় প্রতিমা বিসর্জন। একই সময় রাজধানীর উপকণ্ঠে সময়ে তুরাগ নদী ও মণিরামপুর মোহনপুরস্থ হরিহর নদীতে চলে বিসর্জন। রাস্তার পাশে দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। সাথে ছিলো পুলিশের টহল। সারাদেশে এ বছর ৩১ হাজার ৪৬১টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। যশোরের মণিরামপুরে পূজার সংখ্যা ৯১টি। এসব মণ্ডপে শারদীয় উৎসব নির্বিঘেœ উদযাপন করার জন্য প্রশাসনের পাশাপাশি প্রতিটি পূজা উদযাপন কমিটিও নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে। প্রতিটি মণ্ডপে মণ্ডপে লাগানো হয় সিসিটিভি ক্যামেরা এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি করা হয় মণ্ডপ পাহারার জন্য।