আসাদুজ্জমান সনেট,কালীগঞ্জ
কালীগঞ্জের ছালাভরা টু কোলাবাজার জেসি সড়কের বেগবতী নদীর ওপর সেতুটি পূননির্মানের কাজ চলছে। পুরাতন ব্রীজটি ভাঙার আগে নির্মাণাধীন ব্রীজের পাশেই কাঠ ও বাঁশ দিয়ে অত্যন্ত ছোট আকারের নি¤œমানের বিকল্প সড়ক নির্মান করা হয়। যেখান দিয়ে লোক চলাচল করে আসছিল। কিন্তু চলমান বর্ষার পানির প্রচন্ড স্রোতে বিকল্প সেতুটি ভেঙে গেছে। এখন চরম ভোগান্তিতে পড়েছে দুই পাড়ের কমপক্ষে ৫০ গ্রামের মানুষ। কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী অফিসসূত্রে জানাগেছে, বেগবতী নদীর ওপর কোলাবাজারে সেতুর পূণনির্মানের কাজ চলছে। এজন্য বরাদ্ধ ধরা হয়েছে ৪ কোটি ৫৬ লক্ষ টাকা। সেতুটি ৫০ মিটার দীর্ঘ হওয়ার কথা থাকলেও দুপাশে স্থাপনা থাকার কারণে ৪৪ মিটার ধরা হয়েছে। পুরাতন ব্রীজটি ভাঙার আগেই পাশেই নির্মাণ করা হয়েছিল বিকল্প সড়ক। শামীম এন্টারপ্রাইজ ও মেসার্স জাকাউল্লাহ এÐ ব্রাদার্স ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এ কাজটি বাস্তবায়ন করছে। বেশ আগেই কাজ শুরু হয়েছে কিন্তু বর্ষার চাপে কাজটি আপাতত বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। এলাকাবাসীর ভাষ্য, কোলাবাজারটি দেশের প্রত্যান্তঞ্চালের মধ্যে একটি অন্যতম বড় বাজার। যেখানে পাশাপাশি ২ নং জামাল ও ৩ নং কোলা ইউনিয়নের লোকজন বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। কালীগঞ্জের পূর্বাঞ্চালের কৃষকেরাসহ সব ধরনের মানুষ তাদের উৎপাদিত ফসলসহ যাবতীয় জিনিসপত্র এ বাজারেই বিক্রি করে থাকে।পশ্চিম থেকে পূর্বদিকে প্রবাহিত বেগবতী নদীর উত্তর পাশে জামাল ও দক্ষিণে কোলা ইউনিয়ন অবস্থিত। ফলে এ সেতুটি পাশাপাশি এ দুই ইউনিয়নের সেতুবন্ধনকারী হিসেবে কাজ করে থাকে। এলাকাবাসীর অভিযোগ ব্রীজটির কাজ শুরু হয়েছে অনেক আগে। কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান অল্প সংখ্যক শ্রমিক কাজে লাগিয়েছে। যে কারণে কাজ তেমনটা এগুতে পারেনি। এরমধ্যে বর্ষা চলে এসেছে। তাদের অভিযোগ, ব্রীজটির জন্য বিকল্প সড়ক যেটি নির্মান করা হয়েছে নদীর দুই পাশে মাটি ও ইটের ঘেস দিয়ে। মাঝখানে কাঠ বাঁশ দিয়ে অত্যন্ত ছোট আকারের জায়গা করা হয়েছে। যে দিক দিয়ে প্রয়োজন মত পানি সরতে পারছে না। ফলে পানির চাপ বাড়ছে। এছাড়াও বর্ষার পানিতে নদীতে অন্য বছরের তুলনায় স্্েরাতের গতি বেশি। সেটি সামলাতে কাঠের তৈরী অত্যন্ত ছোট আকারের এ সড়কটি যথেষ্ঠ নয়। ফলে বিকল্প সড়কটি পানিতে ভেসে চলে গেছে। মাঝখানে কিছু কাঠ বাঁশ থাকলেও লোক চলাচল করতে পারছে না। এখন দু পাড়ের মানুষের ভোগান্তির আর শেষ নেই। ব্যবসায়ী লুৎফর রহমান জানান, কোলাবাজার একটি বড় বাজার। ফলে এখানকার নির্মানাধীন ব্রীজটি অধিক জনগুরুত্বপূর্ণ হলেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি অত্যন্ত ধীরগতিতে কাজ করছে। এখন বিকল্প সড়কটিও ভেঙে গেছে। ফলে নদীর একপাশের অনেকগুলো গ্রামের মানুষ বাজারে মালামাল ক্রয় বিক্রয় করতে আসতে পারছে না। আবার ওপারের ব্যবসায়ীরাও দোকানে আসতে পারছেন না। এতে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। বিষয়টি সংশ্লিষ্ঠ দপ্তরকে আগ্রহের সঙ্গে দেখা উচিত। শাহিনুর রহমান নামের অন্য এক ব্যবসায়ী জানান, বিকল্প সড়ক পার হলেই তার বাড়ি। কিন্তু নির্মিত বিকল্প সড়কটি ভেঙে যাওয়ায় তিনি সময় মত দোকানে আসতে পারেননি। তাকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূর ঘুরে দোকানে এসেছেন। তিনি বলেন, কলেজ, হাইস্কুল, প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা, কিন্ডার গার্ডেনসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক বীমাসহ অন্যান্য অনেক প্রতিষ্ঠান বাজারের নিকটবর্তী এপার ওপার মিলে দুই পাশেই রয়েছে। ফলে দুই পাশের মানুষের জন্যই ভোগান্তি নেমে এসেছে। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী আহসান হাবিব জানান, কোলাবাজার একটি জনবহুল গুরুত্বপূর্ণ বাজার। এ বাজারে প্রবেশের সেতুটি পূননির্মান করা হচ্ছে। কিন্তু বর্ষার চাপে কাজ বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। তিনি বলেন বিকল্প সড়ক ভেঙে যাওয়ার কথা শুনে তিনি বারবার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা বলেছেন। আশা করছেন খুব তাড়াতাড়িই মানুষের ভোগান্তি দূর করতে পারবেন। সদ্য যোগদানকারী কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসনে আরা তান্নি জানান, মানুষের ভোগান্তির কথা শুনে তিনি ব্রীজটি পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। তিনি যাবতীয় খোঁজ খবর নিয়েছেন। সংশ্লিষ্ঠ দপ্তরকে জনভোগান্তির বিষয়টি অবহিত করেছেন। আশা করছেন দ্রæতই বিকল্প সড়কে লোক চলাচলের ব্যবস্থা করতে পারবেন।