তারিক লিটু (কয়রা)
খুলনা শহর থেকে শত কিলোমিটার দূরে সুন্দরবনের কূলঘেষা কয়রা উপজেলার অসহায় জনগনের দুঃখ দুর্দশা নিত্যদিনের সঙ্গী।ঘূর্ণিঝড় আইলা, সিডর, আম্ফান,রেমালে বিধ্বস্ত উপকূলীয় কয়রা উপজেলা।জেলা শহর থেকে উপজেলা পর্যন্ত ভাল সড়ক না থাকায় ও উপজেলায় বসবাসের অনেক অসুবিধা থাকায় সরকারি কর্মকর্তারা প্রত্যন্ত এ জনপদে আসতে আগ্রহ দেখায় না।সুন্দরবন উপকূলের এই উপজেলার ভাগ্যহত লক্ষাধিক মানুষের আপদকালীন বিপদে সর্বদা সাহায্য করবে এমন একজন মানুষের আশায় পথ চেয়েছিলো এ অঞ্চলের মানুষ, ঠিক সে সময়ে সহকারী কমিশনার ভূমি হিসেবে যোগদান করেন বিসিএস এর প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা বি.এম তারিক উজ-জামান। যোগদানের পর থেকে জনসেবায় দিন-রাত ছুটছেন উপজেলার এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত।তিনি যোগদানের কয়েক মাস পরেই ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দায়িক্ত পান।
ভারপ্রাপ্ত উপজেলায় নির্বাহী অফিসার হিসাবে যোগদান করার পর থেকে উপকূলীয় এই এলাকার সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির জন্য চেষ্টা অব্যহত রেখেছেন এবং যুব সমাজের অবক্ষয় রোধে মাদক ছেড়ে খেলার মাঠে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন।তাঁর কাজের সুফল ভোগ করছে উপজেলাবাসী।তিনি কয়রায় যোগদানের পর থেকেই জনগনের সেবা করে উপজেলাবাসির মন জয় করেছেন।যোগদানের পর থেকেই বদলে গেছে উপজেলা অফিসের সকল কার্যক্রম ও সেবার মান। কাজে যোগদানের পর সেবা, সততা আর অদম্য কর্ম স্পৃহা দিয়ে জয় করে নিয়েছেন উপজেলাবাসির মন।তিনি যোগদানের পর সফল ভাবে জাতীয় নির্বাচন,উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ভাল ভাবে সম্পূর্ণ করেছেন এবং ঘূর্ণিঝড় রেমালে জনসচেতনতার মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতিরোধ করেছেন।উপকূল এলাকায় জলবায়ু পরিবর্তনে বিরূপ বিষয় ও বৃক্ষরোপনের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়তে তিনি বিভিন্ন স্কুল ও কলেজে শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময় করে শিক্ষার্থীদের সচেতন করে তুলেছেন।জেলেদের মাঝে উপকরণ বিতরণ, ভূমিদস্যুতা দূরীকরণ, ফসলি জমি থেকে অবৈধ ভাবে মাটি কাটা ও বালু উত্তোলন বন্ধ, ভেজাল ও মাদক বিরোধী অভিযান ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা, বাল্যবিবাহ রোধ, হাট বাজারগুলো মনিটরিং করা, স্থানীয় সরকার বিভাগের কার্যক্রমে স্বচ্ছতা বজায় রাখা, প্রকৃত ভূমিহীনদের মাঝে খাস জমি বন্টন,গৃহহীনদের ঘর নির্মাণে উদ্যোগ গ্রহণ।
উপজেলায় বাল্যবিয়ে, যৌতুক, নারীর ক্ষমতায়ন বিষয়ে মানুষ কে সচেতন করতে ভূমিকা রেখেছেন।যার ফলে উপজেলায় বাল্যবিয়ে ও যৌতুকের নির্যাতন কমে আসছে।স্কুল ও কলেজে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের অনলাইন গেম আসক্তি থেকে খেলার মাঠে ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে খেলার মাঠে ফিরিয়ে এনেছেন।
উপজেলা পরিষদে গিয়ে দেখা যায়, সর্বশ্রেণির মানুষ তাদের সমস্যার কথা সরাসরি ইউএনও’র কাছে বলতে পারছেন এবং ওই সকল মানুষের সমস্যার কথাশুনে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দেখা গেছে।কয়রা উপজেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভাপতি খায়রুল আলম বলেন,কয়রা উপজেলার ইতিহাসে এমন জনবান্ধব ইউএনও আমরা আগে দেখিনি। উনি অল্প কয়েকদিনে যেভাবে সকলের ভালোবাসা ও দোয়া পেয়েছেন, এই দেশ একদিন উনার মতো ভালো লোকের কারণেই উন্নতির শিখরে আরোহন করবে।খুলনা জেলা পরিষদ সদস্য ও উপজেলা যুব লীগ নেতা আব্দুল্লাহ আল-মামুন লাভলু বলেন, উপজেলা প্রশাসনের দায়িত্ব পাওয়ার পর হতে ইউএনও তার বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়ে সকলের মন জয় করে চলছেন। তিনি একের পর এক অতুলনীয় কাজ করে যাচ্ছেন যা দেখে মুগ্ধ না হওয়ার উপায় নেই। কয়রাবাসি তার এই সহযোগিতা আজীবন মনে রাখবে।উপজেলা নির্বাহী অফিসার বি.এম তারিক উজ-জামান বলেন,প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ভিশন বাস্তবায়ন ও সুন্দরবনের উপকূলের জনপদ কয়রা কে আধুনিক উন্নত উপজেলা হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি। আমি উপজেলায় ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী অফিসার হিসেবে যোগদানের পর থেকে সরকারি কাজের পাশাপাশি সময় করে যুবকদের নিয়ে কাজ করি।শিক্ষার্থীদের অনলাইন গেম ও খারাপ কাজ হতে বিরত রাখতে পড়াশুনার পাশাপাশি খেলাধুলা ও বিভিন্ন সামাজিক কাজে উদ্বুদ্ধ করেছি।