স্টাফ রিপোর্টার
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলায় ড্রাগন চাষের ব্যাপক বিস্তৃতি রয়েছে।কালীগঞ্জ উপজেলায় বর্তমানে ৩২৮ হেক্টর ড্রাগনের বাগান রয়েছে। এইসব বাগান থেকে প্রতি বছর ৫ হাজার ৫ শত টন ফল উৎপাদন হয়। কিন্তু সম্প্রতি সময়ে ড্রাগন বাগান গুলোতে শিয়ালের উপদ্রব বেড়েছে মাত্রাতিরিক্ত ভাবে। প্রতিটি ক্ষেতে ফল একটু বড় হলেই রাতের আঁধারে ৮/১০াট করে শিয়াল বাগানে প্রবেশ করে,বাগানের ফল কামড়ায়ে কামড়ায়ে নষ্ট করে এবং ফল ছেড়ার জন্য টেনে টেনে গাছও ভেঙ্গে নষ্ট করছে। শিয়ালের এই জ্বালায় দিশেহারা উপজেলার ড্রাগন চাষিরা। কিভাবে এর প্রতিকার করবেন বুঝতে না পেরে উপজেলা কৃষি কর্মকতার হস্তক্ষেপ কামনা করছেন তারা।ভুক্তভোগী মাসুদ রানা একজন ড্রাগন চাষি, তিনি উপজেলার হেলাই গ্রামের তরুণ উদ্যক্তা। নিজ গ্রামে ২ বিঘা জমিতে ৩ বছর যাবত ড্রাগন চাষ করছেন। বিগত বছর গুলোতে ভালো মুনাফা আর্জন করলেও এবছর মাসুদ রানা তার ড্রাগন বাগান নিয়ে পড়েছেন চরম দূশচিন্তায়। কারণ তার বাগানে প্রতি রাতে দল বেধে শিয়াশ ঢুকে ড্রাগন গাছের কান্ড কেটে এবং ফল খেয়ে নষ্ট করছে। প্রতিদিন সকালে তিনি তার বাগানে গিয়ে কমপক্ষে ১৫/২০ টি ছেড়া কান্ড এবং ফল মাটিতে পড়ে থাকতে দেখেন। শিয়ালের এমন উপদ্রবে তিনি অনেক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন। শুধু মাসুদ রানাই না হেলাই গ্রামের শরিফুল ইসলাম, লাভলু, আনিস, কালাম, জহুরুল এর ড্রাগন বাগানেও শিয়াল এর এমন উপদ্রব দেখা দিয়েছে। বেড়া কিংবা নেট ব্যবহার করেও ড্রাগন চাষিরা শিয়ালের এই অত্যাচার থেকে রেহাই পাঁচ্ছেননা। এছাড়াও পৌর এলাকার চাচড়া, শিবনগর, কাশিপুর,চাপালি গ্রামের ড্রাগন চাষিদেরও এ্কই অভিযোগ শোনা যাচ্ছে। শিয়াল একটি বন্য প্রানি, আর শিয়াল সহ যেকোন ধরনের বন্য প্রানী নিধন আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। যে কারণে ড্রাগন চাষীরা বিষ প্রয়োগ কিংবা যেকোনো উপায়ে শিয়াল মারতেও পারছেন না। ফলে তারা এব্যপারটি নিয়ে চরমভাবে চিন্তিত। এখন তারা কোথায় যাবেন এবং কিভাবে এ অবস্থা থেকে পরিত্রান পাবেন সেটাও বুঝতে পারছেন না।অনেকে আবার রাতে টর্চ লাইট নিয়ে বাগানে গিয়ে পাহারা দিয়ে থাকে। শিয়াল আসলে তারা ধাওয়া করছে। শিয়ালের অত্যাচারে ড্রাগন ক্ষেতমালিকরা হতাশ হয়ে পড়েছে।
ঝিনাইদহ ড্রাগন চাষী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক আহসানুল ইসলাম ডন বলেন, এবছর ড্রাগন বাগানে শিয়ালের উৎপাত অনেক বেশী। বন্য প্রানী হত্যা আইনগত ভাবে নিষেধ হওয়ার কারণে আমরা চাষীদেরকে এ ব্যাপারে সচেতন করেছি, বাগানে লাইটের ব্যবস্থা করা,আওয়াজের ব্যবস্থা করা এবং পাহারা দেওয়ার ব্যপারে তাদেরকে পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।এবছরের সিজন তো শেষের দিকে তাই এবছরের চিন্তা না করে আগামী বছরে কিভাবে এগুলো নিয়ন্ত্রন করা যায়, সে বিষয় নিয়ে আমরা এখন বেশী গুরুত্ব দিচ্ছি।
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহাবুল আলম রনি জানান,শিয়ালের ব্যাপারটা আমি অবগত না। তবে আমি অবশ্যই খোঁজ খবর নিয়ে দেখবো এবং কি করলে চাষীরা এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে পারে সেটা নিয়ে আলোচনা করে ব্যবস্থা গ্রহন করবো।