লাবলুর রহমান, চৌগাছা (যশোর)
যশোরের চৌগাছায় দুর্নীতি ও জালিয়াতির অভিযোগে দিঘড়ী দাখিল মাদ্রাসার সুপার শাহানাজ পারভীনকে বরখাস্ত করা হয়েছে। সোমবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুস্মিতা সাহা তাকে এ বরখাস্ত আদেশ দেন। সুপারের দুর্নীতি ও জালিয়াতি তদন্ত করতে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।একই সাথে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম রফিকুজ্জামানকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মেহেদী হাসান ও উপজেলা বিআরডিবি কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান। তদন্ত কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে তাদের তদন্ত রির্পোট পেশ করতে আদেশ দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুস্মিতা সাহা। এলাকাবাসীর অভিযোগ সুপার শাহানাজ পারভীন এ মাদ্রাসায় যোগদানের পর থেকেই বিভিন্ন অনিয়ম, দূর্নীতি, জালিয়াতি ও স্বেচ্ছাচারিতায় জড়িয়ে পড়েন। এমন অভিযোগের বিচারের দাবিতে এলাকাবাসী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট একটি লিখিত অভিযোগ দেন। পরে মাদ্রাসাটির সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী সুপারের অপসারনের দাবীতে উপজেলা শহরের বিক্ষোভ মিছিল ও উপজেলা পরিষদ চত্বরে মানব বন্ধন করেন। এলাকাবাসীর দাবির মুখে সোমবার বেলা ১২ টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্বরেজমিনে তদন্তে জন্য দিঘড়ী দাখিল মাদ্রাসায় যান। এ সংবাদ পেয়ে এলাকাবাসী দিঘড়ী দাখিল মাদ্রাসা মাঠে উপস্থিত হন। নির্বাহী কর্মকর্তার সামনে মাদ্রাসাটির সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী সুপারের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উপস্থিত সকলের মতামতের ভিত্তিতে সুপার শাহানাজ পারভীনকে সাময়িক বরখাস্তাদেশ দেন। এ সময় দিঘড়ী গ্রামের বাসিন্দা ও মাদ্রসার প্রাক্তন ছাত্র শেখ ফরিদ উদ্দীন, দিঘড়ী গ্রামের বাসিন্দা মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির দাতা সদস্য নজরুল ইসলাম, দিঘড়ী গ্রামের বাসিন্দা ও মাদ্রসা প্রতিষ্ঠাতা হাসেম আলী, প্রাক্তন ছাত্র শরিফুল ইসলাম, অভিভাবক আইয়ুব হোসেন, প্রাক্তন ছাত্র হাফেজ টিটো রহমান, জামাল হোসেন, মাধবপুর গ্রামের আশিকুর রহমান, কাকুড়িয়া গ্রামের আবু মুছা ও মাষ্টার মইনদ্দীন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।এলাকাবাসীর অভিযোগ সুপার শাহানাজ পারভীন এ মাদ্রাসায় যোগদানের পর থেকে নানা অপকর্মের সাথে জড়িয়ে পড়েন। তিনি অনিয়ম, দূর্নীতি, স্বেচছাচারিতা, লুটপাট, মাদ্রাসার বিভিন্ন ফান্ড থেকে অর্থ তসরুপ, সরকারের দেওয়া কম্পিউটার ল্যাব আত্মসাৎ, জালিয়াতি করে বিভিন্ন পদে নিয়োগ বানিজ্যে, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরন, শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে অতিরিক্ত ফি আদায়, রাজনৈতিক দাপট প্রদর্শন। তার দূর্নীতি ও স্বেচছাচারিতার কারণে প্রতিষ্ঠানটির অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে। ফলে এলাকাবাসীর একদফা দাবি সুপার শাহানাজ পারভীনকে অপসারণ। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুস্মিতা সাহা বলেন, এলাকাবাসীর দাবির মুখে সুপার শাহানাজ পারভীনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটির দেওয়া তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।